ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার চাপরতলা গ্রামের জুয়েল মিয়া (২৬) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। পরকীয়ার জেরেই তিনি নৃশংসভাবে খুন হয়েছেন বলে বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপাপ্ত পুলিশ সুপার) মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন সাংবাদিকদের সামনে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ব্রিফ করেন। হত্যাকাণ্ডের পুরো তদন্ত কাজটি তদারিক করেছেন তিনি।
এদিকে জুয়েল হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী হারুন মিয়া (৩০) ও তার স্ত্রী আসমা খাতুনকে (২৪) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় আরও পাঁচজন অভিযুক্ত আসামি পলাতক রয়েছেন বলে জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন বলেন, নাসিরনগর উপজেলার চাপরতলা ইউনিয়নের চাপরতলা গ্রামের মৃত আলতাব আলীর ছেলে হারুন মিয়া চট্টগ্রামের আনোয়ারায় বিভিন্ন কসমেটিকস ফেরি করে বিক্রি করেন। বাড়িতে হারুনের স্ত্রী আসমা একাই থাকতেন। একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে আসমার সঙ্গে ডেকোরেটর কর্মী জুয়েল মিয়ার পরিচয় হয়।
সেই পরিচয়ের সূত্র ধরে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে জুয়েল ও আসমা একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কে মিলিত হয়। বিষয়টি জানতে পেরে হারুন তাদের দুজনকে সতর্ক করে দেন। কিন্তু তাতেও কোনো কাজ হয়নি।
এ কারণে গত ১৫/২০দিন আগে রাগের মাথায় নিজের স্ত্রী আসমার মাথার চুলও কেটে দেন হারুন। এরপরই স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমিক জুয়েলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন হারুন।
পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১৪ মার্চ রাতে আসমার মাধ্যমে ফোন করে কৌশলে জুয়েলকে বাড়িতে ডেকে আনেন হারুন। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আসমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে মিলিত হওয়ার এক মিনিটের মাথায় হারুন লাঠি দিয়ে জুয়েলকে আঘাত করেন।
পরে হারুনের ছোট বাচ্চার শার্ট দিয়ে জুয়েলের পা এবং গামছা দিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো হয়। এরপর হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়া বাকিরা ধারালো ছুরি দিয়ে জুয়েলকে মুখমণ্ডলসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। এরপর নিহত জুয়েলের লাশ একটি ডোবায় ফেলে দেয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, হত্যাকাণ্ডের পর হারুন চট্টগ্রামের আনোয়ারায় চলে যান। ঘটনার পাঁচদিন পর গত ১৯ মার্চ জুয়েলের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর হত্যাকাণ্ডের শিকার নিহত জুয়েলের চাচা আব্দুল হকের করা মামলার সূত্র ধরে পুলিশ তদন্ত কাজ শুরু করে।