ব্রাহ্মণবাড়িয়া: মৃত্যু পথযাত্রী অসুস্থ শিক্ষক মো.ইয়াছিন মিয়ার খোঁজ নেন না তার সন্তানেরা। যেখানে সন্তানেরা বাবার পাশে থেকে সেবা যত্মের পাশাপশি চিকিৎসা করার কথা। কিন্তু সেখানে উল্টো নানা কৌশলে বসত বাড়ি, জায়গা জমি ও পেনশনের টাকা নিজেদের নামে লিখিয়ে অসুস্থ বাবাকে ফেলে চলে গেছেন তারা। এমন কষ্ট নিয়েই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউপির ধাতুর পহেলা গ্রামের শিক্ষক মো.ইয়াছিন মিয়ার জীবন প্রদীপ নিভতে বসেছে ধুকে ধুকে।
ধাতুর পহেলা গ্রামের বাসিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক ও পল্লী চিকিৎসক মো. ইয়াসিন মিয়ার ছেলে মো. সোহেল মিয়া, সাহেল মিয়া ও রাসেল মিয়া নামে তিন ছেলে রয়েছে। তার স্ত্রী বহু দিন আগেই মারা গেছেন। ছেলেদের কথা ভেবে তিনি আর পরে বিয়ে করেননি। জায়গা জমি ও আর্থিক অবস্থা ও বেশ ভালেই ছিল। বহু কষ্টে সন্তানদেরকে তিনি লেখা পড়া শিখিয়েছেন। বর্তমানে ছেলেদের আর্থিক অবস্থাও বেশ ভালো।
বাবা ইয়াছিন মিয়া সুস্থ থাকা অবস্থায় তিনি ছেলেদেরকে বিয়ে করান। বিয়ের পর নানা কৌশলে বসত বাড়ি, জায়গা জমি ও পেনশনের টাকা নিজেদের নামে লিখে নেয় সন্তানেরা। এতে তিনি মানসিক আঘাত পেয়ে ব্রেইন স্টোক করেন। এর পর থেকে সন্তানেরা বাবার চিকিৎসা করাতে অপরাগত প্রকাশ করে অন্যত্র চলে যায়। সন্তানেরা পাশে না থাকায় বিনা চিকিৎসায় এখন অসহায়ের মতো পড়ে আছেন তিনি।
এক পুত্রবধূ ছাড়া তার পাশে নেই কেউ। গত কয়েক বছর ধরে তিনি কোনো কিছু বলতে পারছেন না। এমনকি বিছানা থেকেও উঠতে পারছেন না। বিছানায় শুয়ে থাকতে থাকতে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ঠসা পড়ে গেছে। তার সঙ্গে থাকা ছেলের বউ মিনা বেগম বলেন, শ্বশুর স্ট্রোক করার পর থেকে বাবার খোঁজ খবর যেমন রাখেনি সন্তানেরা ঠিক তেমনি ভাবে তারও খোঁজ খবর নিচ্ছে না তার স্বামী। বর্তমানে চলা খুবই কষ্টকর হয়ে পড়ছে। বিনা চিকিৎসায় শ্বশুর এখন মৃত্যুর প্রহর গুণছেন। এ অবস্থায় তার চিকিৎসার জন্য সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করছেন তিনি।
ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মো. আব্দুল আওয়াল বলেন, তিনি দীর্ঘ দিন ধরে অসুস্থ হয়ে বাড়িতে রয়েছেন। এভাবে কৌশলে পেনশনের টাকাসহ জায়গাজমি নিজেদের নামে লিখে নিয়ে দেখভাল করবে না এটা বিশ্বাস করতে খুবই কষ্ট হচ্ছে। খুব কষ্ট করে তিনি সন্তানদেরকে লেখাপড়া শিখিয়েছেন। প্রবাসে তারা ভালো অবস্থানে রয়েছে।-ডেইলি বাংলাদেশ