ব্রাহ্মণবাড়ীয়া: বাঁশঝাড়ের ফাঁকে মানুষের হাতের মতো দেখতে একটি উদ্ভিদকে নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়ীয়ায়।
জেলার বিজয়নগরের বুধন্তি ইউনিয়নের কেনা গ্রামের আজম মোল্লার বাঁশঝাড়ে গজিয়েছে মানুষের হাত সদৃশ এই উদ্ভিদটি। সেটিকে নিয়েই শুরু হয়েছে তোলপাড়। স্থানীয়রা এটিকে ‘গায়েবী হাত’ আখ্যা দিয়ে তোলপাড় শুরু করেছেন।
গায়েবী (!) সেই হাত দেখতে ইতোমধ্যে কয়েক হাজার মানুষ সেখানে ভিড় জমিয়েছেন।
এদিকে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজম মোল্লার বাঁশঝাড়ে আস্তানা গেড়েছেন কয়েকজন ফকির। তারা ‘গায়েবী হাত’ দেখতে আসা মানুষের মধ্যে দেদারছে পানি পড়া বিতরণ শুরু করেছেন। উৎসুক জনতাও রোগ সারানোর আশায় পানি পড়া নিচ্ছেন তাদের কাছ থেকে।
সোমবার সরেজমিনে দেখতে এই প্রতিবেদক ওই গ্রামে যান। বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা কয়েক হাজার মানুষের ভিড় জমিয়েছেন সেখানে। ইতোমধ্যে ফকির-দরবেশের আস্তানাও বসে গেছে সেখানে। পাশের গ্রামের আহাম্মদ নামে একজন ‘দরবেশ’ সেখানে আস্তানা গেড়েছেন। তার আস্তানার সামনে আগরবাতি জ্বলছে। কৌতুহলী মানুষের ভিড় সামলাতে বাঁশের বেড়াও দিয়েছেন এই ‘দরবেশ’।
‘দরবেশ’ আহাম্মদ জানান, রোববার (২৭ অক্টোবর) সকালে মানুষের হাত আকৃতির এই বস্তুটিকে দেখতে পাওয়া যায়। একটি কাঁটা বাঁশের গোড়ায় এ বস্তুটি গজিয়েছে।
তিনি আরো জানান, রাতের আঁধারে এই হাতের পাশের আরো তিনটি বাঁশের কেটে ফেলা গোড়া থেকে অলৌকিকভাবে পানি বের হয়েছে। সোমবার ফজরের সময় পানি বের হওয়া বন্ধ হয়। কিন্তু তার আগে সেই পানির কিছুটা সংগ্রহ করে রাখা হয়। সেই পানি সাধারণ পানির সাথে মিশিয়ে এলাকার কিছু মানুষ রোগ মুক্তির আশায় নিয়ে যাচ্ছেন। ইচ্ছে হলে অনেকে টাকাও দিয়ে যাচ্ছেন।
আজম মোল্লার ছেলে হৃদয় বলেন, ‘বাঁশের গোড়া থেকে বের হওয়া হাতটিকে দা দিয়ে কো'প দিয়েছিলাম। দা ফিরে এসেছে, অথচ হাতটি কা'টেনি!’
এ বিষয়ে কেনা আসমা ইসলাম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জানান, এটি ব্যাঙের ছাতা বা মাশরুম জাতীয় কিছু হতে পারে। এটি নিয়ে অতি উৎসাহের কিছু নেই।
কেনা গ্রামের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেছি। আমার মনে হয়, এটি ব্যাঙের ছাতার শক্ত অংশ, অলৌকিক কিছু নয়। ইসলামে এসবের কোনো ভিত্তি নেই। আমি নিজে সেখানে গিয়ে কথিত সেই হাতের কিছু অংশ ভে'ঙ্গেছি। ভা'ঙ্গার পর গুজব রটেছে, আমি নাকি অসুস্থ হয়ে গেছি। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি সুস্থই আছি।’
বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহের নিগার বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। এ ব্যাপারে পুলিশ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়জুল আমিন জানান, বিষয়টি দেখার জন্য তিনি এক অফিসারকে নির্দেশ দিয়েছেন। অপরাধমূলক কিছু দেখলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।