এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : বাড়ির পেছনে একটি টয়লেটে আটকে রাখা হয়েছিলো এক যুবককে। আটকে রাখাকালীন সময়ে তার খাবার ও পরিচর্যার ক্ষেত্রে কোনো অসুবিধা হচ্ছিলো না। মা, ভাই এবং ভাইয়ের স্ত্রী মিলে নিয়মিত ওই যুবকের দেখাশোনা করতেন।
টয়লেটের ভেতরেই বালিশ মাথায় দিয়ে ঘুমাতেন ওই যুবক। এভাবেই মাসের পর মাস চলছিলো। আত্মীয়-স্বজন বা আশপাশের কেউই এঘটনা জানতে পারেনি। সোমবার(২৯ এপ্রিল) দুপুরে স্থানীয় এক ব্যক্তি টয়লেটের নিচের ফাঁকা অংশ দিয়ে দেখতে পান ওই যুবককে। পরে খবর দিলে পুলিশ এসে ওই যুবককে উদ্ধার করে।
এমনই এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার সদর ইউনিয়নের কাশিপাড়া এলাকায়। উদ্ধার হওয়া সুজিত দাস (৩৪) নামে ওই যুবক কাশিপাড়া এলাকার হরেন্দ্র দাসের ছেলে।
নাসিরনগর থানার ডিউটি অফিসার এএসআই কামরুল হাসান বিষয়টি মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল)বায়ান্ন টিভিকে নিশ্চিত করেছেন।
থানা পুলিস জানায়, মানসিক ভারসাম্যহীন সুজিত সাত বছর আগে তার চাচাকে আঘাত করে হত্যা করেন। এ ঘটনায় হত্যা মামলায় জেলে যান সুজিত। পরে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে আবারও পাগলামি শুরু করেন। এতে পরিবারের সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তাই পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তার কথা ভেবে বাড়ির পেছনে টয়লেটের ছোট একটি রুমে তাকে আটকিয়ে রাখা হয়।
থানা পুলিশ আরও জানায়, পরিবারের স্বজনরা সুজিতকে অনেক চিকিৎসাও করায়। তবে কোনো কাজ হয়নি। এই রুমে সুজিত প্রায় ৯ মাস আটকা ছিল। সোমবার দুপুরে খবর পেয়ে পুলিশ সুজিতকে ওই রুম থেকে উদ্ধার করে।
টয়লেটে আটকে রাখার বিষয়টি স্বীকার করে সুজিতের মা আরুতি রাণী দাস গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মা হয়ে সন্তানকে এভাবে আটকে রাখা খুবই যন্ত্রণাদায়ক ব্যাপার। তবুও সামাজিক ও পারিবারিক সদস্যদের নিরাপত্তার স্বার্থে ওকে আটকে রাখা হয়েছিল। আমরা সুজিতের চিকিৎসার জন্য দীর্ঘদিন প্রচেষ্টা চালিয়েছি। কিন্তু সে ওষুধ গ্রহণের ব্যাপারে কোনোভাবেই আগ্রহী নয়। বরং সে বিভিন্ন সময় হিংস্র ও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে।’