বুধবার, ০২ জুলাই, ২০২৫, ০২:৪৬:৩৩

বাবার মৃত্যুর পর মরদেহ নিতে অস্বীকৃতি সন্তানসহ পরিবারের সদস্যদের

বাবার মৃত্যুর পর মরদেহ নিতে অস্বীকৃতি সন্তানসহ পরিবারের সদস্যদের

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মোহাম্মদ ইব্রাহিম নামের এক বৃদ্ধের মৃত্যুর পর মরদেহ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন তার সন্তানসহ পরিবারের সদস্যরা। পরে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘর’র সদস্যরা মরদেহের দাফন সম্পন্ন করেন।

মঙ্গলবার (১ জুলাই) বিকেলে মোহাম্মদ ইব্রাহিমের মরদেহ দাফন করা হয়। এর আগে সোমবার (৩০ জুন) মোহাম্মদ ইব্রাহিম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য গেলে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

জানা গেছে, মোহাম্মদ ইব্রাহিম ১৯৬৬ সালে চট্টগ্রামের হালিশহরের ফইল্লাতলি বাজার এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। যুবক বয়সে চট্টগ্রাম ত্যাগ করে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে কাজ করতে থাকেন। পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার কাদেরপুল, মহিষকার এলাকার তাহমিনা নামে একজনকে বিয়ে করেন। তাদের সংসারে ইসরাফিল সিয়াম নামে এক ছেলে রয়েছে। পরে স্ত্রী তাহমিনা ইব্রাহিম তাকে ছেড়ে অন্যত্র বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।

আরও জানা গেছে, মৃতের কাছে থাকা মোবাইল নম্বর থেকে যোগাযোগ করে পুলিশ তার ছেলের পরিচয় শনাক্ত করে। ছেলে ইসরাফিল সিয়ামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বাবার মরদেহ নিতে অস্বীকৃতি জানান। এমন অবস্থায় তার আর কোনো উত্তরাধিকারী না থাকায় সদর মডেল থানা বিষয়টি ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘরকে অবহিত করে। পরে বাতিঘর ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক ইব্রাহিমের দাফন ও জানাজা সম্পন্ন করে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ মোজাফফর হোসেন বলেন, বৃদ্ধ ইব্রাহিমের পরিবার মরদেহ নিতে রাজি না হওয়ায় বাতিঘরকে জানানো হয়। তারা যথাযথ মর্যাদায় জানাজা পড়ে দাফনকার্য সম্পন্ন করে। এটি একটি মানবিক দৃষ্টান্ত।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘরের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. আজহার উদ্দিন বলেন, মানবিক সংগঠন বাতিঘর সুদীর্ঘ বছর ধরে নাম-পরিচয়হীন অবহেলিত মরদেহের দাফনকার্য সম্পন্ন করে আসছে। ইব্রাহিম মিয়ার মরদেহ পরিবারের কেউ নিতে চাইছে না জেনে যথাযথ সম্মানের সঙ্গে জানাজা শেষে দাফন করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সমাজের অবহেলিত, অচেনা, নামহীন কিংবা পরিবারবিচ্ছিন্ন মানুষের জন্যই বাতিঘরের এ মানবিক কার্যক্রম। একজন মানুষ যেন মরার পরও অবহেলিত না হন, সেটাই আমাদের মূল লক্ষ্য।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে