মঙ্গলবার, ১৯ এপ্রিল, ২০১৬, ০৮:৪৩:০৫

সৎ শাশুড়িকে কুপিয়ে ছেলেসহ ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিলেন এক মা! কিন্তু কেন?

সৎ শাশুড়িকে কুপিয়ে ছেলেসহ ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিলেন এক মা! কিন্তু কেন?

ব্রাহ্মণবাড়িয়া : সৎ শাশুড়িকে কুপিয়ে পাঁচ বছরের ছেলেসহ ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন এক মা। ঢাকা-সিলেট-চট্টগ্রাম রেলপথে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কাউতলি রেলসেতুর কাছে সোমবার এই ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন কসবা উপজেলার খাড়েরা ইউনিয়নের সোনারগাঁও গ্রামের ইতালিপ্রবাসী কবির আহমেদের স্ত্রী রিনা আক্তার (৩০) ও তাঁর ছেলে গোলাম জিলানী।

২০১০ সালে কসবার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের বিষ্ণাউড়ি গ্রামের আবুল হাশেমের মেয়ে রিনা আক্তারের সঙ্গে বিয়ে হয় কবিরের। সেই থেকেই সৎ শাশুড়ি খায়রুন আক্তার ও একমাত্র সন্তানকে নিয়ে গ্রামের দক্ষিণপাড়ার একটি বাড়িতে থাকতেন রিনা।

গত রোববার ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের সুপার ক্রিসেন্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রিনার ছোট বোন সামসুন নাহার একটি ছেলেসন্তানের জন্ম দেন। সোমবার ছেলেকে নিয়ে ওই হাসপাতালে ছোট বোনকে দেখতে যান রিনা। বোনকে দেখে সকাল আটটার দিকে ছেলেকে নিয়ে তিনি বের হয়ে যান। সাড়ে আটটার দিকে আখাউড়া থেকে ঢাকাগামী ডেমু কমিউটার ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে ঘটনাস্থলেই রিনা ও জিলানীর মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাঁদের লাশ উদ্ধার করে।

খাড়েরা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য শওকত আলীসহ কয়েকজন বলেন, বেলা ১১টার দিকে তাঁরা রিনা ও জিলানীর মৃত্যুর খবর জানতে পারেন। পরে তাঁরা রিনার শাশুড়িকে খুঁজে না পেয়ে মুঠোফোনে অনেকবার ফোন দেন। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। পরে এলাকার লোকজনকে নিয়ে তাঁরা কবিরের বাড়ির দুটি বড় গেট, একটি কলাপসিবল গেট এবং দরজা ভেঙে ঘরের ভেতরে ঢুকে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় রিনার সৎ শাশুড়ি খায়রুন আক্তারকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে পাঠান। সেখান থেকে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। সকালে বোন সামসুন নাহারকে দেখতে যাওয়ার আগে রিনা তাঁর সৎ শাশুড়িকে দা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন বলে এলাকাবাসী ধারণা করছেন।

রিনার মা আনোয়ারা বেগম বলেন, সকালে সামসুন নাহারকে দেখতে আসেন রিনা। এ সময় তাঁর মন-মেজাজ ভালো ছিল না। কারণ জানতে চাইলেও তিনি কিছু বলেননি। কিছুক্ষণ পর রিনা হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যান।

রিনার বড় বোনের স্বামী কাজী উবায়দুল হক বলেন, রিনার মানসিক সমস্যা ছিল। মাস দুয়েক আগে ঢাকায় তাঁর চিকিৎসা করানো হয়।

গতকাল বিকেলে কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তবে এ ঘটনায় এখনো কেউ মামলা করেনি।’ আখাউড়া রেলওয়ে থানার ওসি আবদুস সাত্তার বলেন, মা-ছেলে আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে।
১৯ এপ্রিল ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে