আজিজুল আলম সঞ্চয় : লিজা আক্তার (১৬)। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার দশদোনা গ্রামের হতদরিদ্র আবুল হাশেমের মেয়ে লিজা চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে। বাঞ্ছারামপুর বালিকা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে অংশ নিয়ে সে এই ফলাফল অর্জন করে। লিজার এই ফলাফলে খুশি তার সহপাঠী আর স্কুল শিক্ষকরাও। লিজার এখন একটাই স্বপ্ন সে ডাক্তারি পড়বে। কিন্তু দারিদ্র্য তার এই স্বপ্নের পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাঞ্ছারামপুর উপজেলার দশদোনা গ্রামের আবুল হাশেমের মেয়ে লিজা আক্তারের ছোটবেলা থেকে পড়ালেখার প্রতি অধীর আগ্রহ। লিজার বাবা ঢাকার একটি বেসরকারি কোম্পানিতে বাবুর্চির চাকরি করেন। সাত সদস্যের টানাপড়েনের সংসারেও স্থানীয়দের কাছ থেকে সহযোগিতা নিয়ে লিজাকে লেখাপড়া করিয়েছেন তিনি। অদম্য মেধাবী লিজা গত ২০১০ সালে পঞ্চম শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুলে এবং ২০১৩ সালে অষ্টম শ্রেণিতে সাধারণ গ্রেডে বৃত্তি পেয়েছিল।
নিজের স্বপ্নের কথা জানিয়ে লিজা বলে, তার বাবার সাধ্য ছিল না তাকে প্রাইভেট পড়ানোর কিংবা কেচিং করানোর। স্কুলের শিক্ষকরা সারাবছর তাকে বিনা বেতনে প্রাইভেট পড়িয়েছেন কোচিং করার সুযোগ দিয়েছেন। সবার সহযোগিতার কারণেই সে এই ফলাফল অর্জন করতে পেরেছে, এখন আরো পড়ালেখা করে সে ডাক্তার হয়ে সাধারণ মানুষের সেবা করতে চায়। প্রয়োজনে টিউশনি করে হলেও ভালো কলেজে লেখাপড়া করে সে তার স্বপ্ন বাস্তাবায়ন করতে চায়।
লিজার বাবা আবুল হাসেম বলেন, আমার যে আয় হয় তাতে সংসারই ভালো করে চলে না। কিন্তু পড়ালেখার প্রতি লিজার আগ্রহের কারণেই মানুষের সহযোগিতা নিয়ে এ পর্যন্ত ওকে পড়িয়েছি। কিন্তু লিজার স্বপ্ন পূরণের জন্য ভালো কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়িয়ে ওকে ডাক্তার বানানো আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই মেয়ের স্বপ্ন পূরণের জন্য তিনি সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসার অনুরোধ জানিয়েছেন।
বাঞ্ছারামপুর বালিকা পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম জানান, লিজা খুবই মেধাবী ছাত্রী। দরিদ্র হওয়ায় পড়ালেখার প্রতি তার আগ্রহের কারণেই স্কুলে তাকে বিনা বেতনে তাকে অধ্যয়নের সুযোগ দেয়া হয়েছে। তার কাছ থেকে বেতন কিংবা কোচিংয়ের জন্য কোনো ফি নেয়া হয়নি। লিজার ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন পূরণের জন্য সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার অনুরোধ জানান তিনি। -জাগো নিউজ
১৮ মে, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএম