রবিবার, ২৫ জুন, ২০১৭, ১০:২২:১১

আজ চাঁদপুরের ৪০ গ্রামে ঈদ

 আজ চাঁদপুরের ৪০ গ্রামে ঈদ

চাঁদপুর থেকে: চাঁদপুরের ৪০ গ্রামে আজ রোববার সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে আগাম ঈদ অনুষ্ঠিত হবে। গ্রামগুলোর লক্ষাধিক অনুসারী আজ ঈদ উদযাপন করবেন। হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা গ্রামের পীরবাড়ির সাদ্রা সিনিয়র মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মো. আবু বকর ছিদ্দিক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানিয়েছেন, শনিবার সৌদি আরবে চাঁদ দেখা গেলে আমাদের এখানে রোববার ঈদুল ফিতর উদযাপন করা হবে। সে অনুযায়ী ঈদের নামাজসহ অন্যান্য প্রস্তুতিও ইতোমধ্যে নেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে সাদ্রা দরবার শরিফের বর্তমান পীর মাওলানা আবু জোফার আব্দুল হাই জানান, সাদ্রা দরবার শরিফের তৎকালীন পীর মাও. ইছহাক আরব দেশসমূহের সঙ্গে মিল রেখে আগাম রোজা রাখাসহ দুই উৎসব ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা পালনের নিয়ম চালু করেন।

হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা গ্রামে ১৯২৮ সাল থেকে একদিন আগের এই প্রথা চালু করলেও এখনো লক্ষাধিক মানুষ দেশের নিয়মের বাইরে অর্থাৎ একদিন আগে ঈদ উদযাপন করছেন।

সাদ্রা ছাড়াও জেলার ৪০ গ্রামের একাংশ ওই পীরের অনুসারীরা একদিন আগে ঈদসহ অন্যান্য ধর্মীয় অনুষ্ঠান উদযাপন করেন। গ্রামগুলো হচ্ছে হাজীগঞ্জ উপজেলার বলাখাল, শ্রীপুর, মনিহার, বরকুল, অলীপুর, বেলচোঁ, রাজারগাঁও, জাকনি, কালচোঁ, মেনাপুর; ফরিদগঞ্জ উপজেলার শাচনমেঘ, খিলা, উভারামপুর, পাইকপাড়া, বিঘা, উটতলী, বালিথুবা, শোল্লা, রূপসা, গোয়ালভাওর, কড়ইতলী, নয়ারহাট; মতলবের মহনপুর, এখলাসপুর, দশানী, নায়েরগাঁও, বেলতলীসহ কচুয়া ও শাহরাস্তির বেশ কয়েকটি গ্রাম।

এ ছাড়া চাঁদপুরের পার্শ্ববর্তী নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ভোলা, বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা, শরীয়তপুর ও চট্টগ্রাম জেলার কয়েকটি স্থানে মাওঃ ইছহাক খানের অনুসারীরা একদিন আগে ঈদ উদযাপন করেন।

১৯২৮ সালে হাজীগঞ্জ রামচন্দ্রপুর মাদ্রাসার তৎকালীন অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ ইছহাক খান আরব দেশসমূহের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ঈদ উদযাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন।

কিন্তু স্থানীয় গ্রামবাসী অসহযোগিতা করলে সে উদ্যোগ ভেস্তে যায়। দেশের সরকারি নিয়মের বাইরে একদিন আগে ঈদ পালনের উদ্যোগ গ্রহণের কারণে সে সময় মাওলানা খানকে মাদ্রাসার অধ্যক্ষের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

ধনাঢ্য ও প্রভাবশালী পরিবারের সন্তান মাওলানা খান ওই বছরই চলে আসেন নিজ গ্রাম একই উপজেলার সাদ্রায়। আরব দেশসমূহের রীতিনীতি অনুযায়ী ধর্ম-কর্ম পালনের জন্য প্রথমে নিজ গ্রামে শুরু করেন ব্যাপক গণসংযোগ। গ্রামের অসহায়, দুস্থ মুসলমানদের প্রচুর আর্থিক সাহায্য দিয়ে আরব দেশগুলো সঙ্গে মিল রেখে একদিন আগে ঈদসহ সব প্রকার ধর্মীয় অনুষ্ঠান উদযাপনপ্রথা চালু করেন।

এদিকে একদিন আগে ঈদের জামাত করা নিয়ে মতবিরোধে সৃষ্ট সংঘর্ষে ১৯৮৬-৮৭ সালে দুই ঈদে দুশতাধিক মানুষ আহত হন। এর পর থেকে প্রতিবছর সাদ্রায় ঈদের দিন ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
এমটিনিউজ২৪/টিটি/পিএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে