সোমবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৩, ০১:৪৯:০১

রহস্যময় আগুন নিয়ে ফরিদগঞ্জে তোলপাড়

রহস্যময় আগুন নিয়ে ফরিদগঞ্জে তোলপাড়

ফরিদগঞ্জ : রহস্যময় আগুন থেকে বাঁচার জন্য ঘরজুড়ে তাবিজসহ নানা ধরনের কবিরাজি সামগ্রীতে ভরপুর। কুরআন তেলাওয়াত, দোয়া-দরুদ পাঠ এমনকি গরু জবাই করে খাওয়ালেও এ আগুন থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না ওই পরিবারের সদস্যরা। 

কিভাবে কোথা থেকে কখন আগুন লাগছে তা কেউই বলতে পারছেন না। স্থানীয় মসজিদের ইমামও নিজের চোখে আগুন লাগার দৃশ্য দেখেছেন। কয়েক মাস ধরে রহস্যময় আগুন নিয়ে আতঙ্কে এলাকাবাসী।

জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের দায়চারা গ্রামের চন্দের বাড়ির শাহাদাত হোসেনের (৭৫) বসত ঘরের ঘটনা এটি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ তথ্য জেনে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষজন এসে ভিড় করছেন রহস্যময় এ আগুনের বিষয়ে জানতে।

জানা গেছে, ওই গ্রামের বৃদ্ধ শাহাদাত হোসেনের পাকা ও টিনের তৈরি চৌচালা বসত ঘরে, বাড়িতে প্রবেশ পথের পর্দায়, রান্নাঘরের চালে, ঘরের ফ্রিজের ভেতরের অংশে, আসবাবপত্র, জামাকাপড় এমনকি গায়ে থাকা পোশাকেও হঠাৎ আগুন লাগা থেকে রক্ষা পাচ্ছে না। 

এ ঘরের ব্যবহৃত জিনিসপত্র প্রতিবেশীদের ঘরে রাখা হলে সেখানেও শুধুমাত্র এ ঘরের জিনিসপত্রে আগুন লাগছে। মসজিদের মতো পবিত্র স্থানে রাখা হলেও সেই মসজিদের অন্যান্য সব সামগ্রী নিরাপদে থাকলেও আগুন লাগছে শুধু শাহাদাত হোসেনের পরিবারের ব্যবহৃত জিনিসপত্রে। কোথায় এর সূত্রপাত জানে না কেউ। তবে কখনো রাতের বেলায় এমন আগুন জ্বলতে দেখা যায়নি।

শাহাদাত হোসেন জানান, গত ৬-৭ মাস ধরে এভাবে আগুন জ্বলে আসছে। কে জ্বালাচ্ছে, কিভাবে জ্বালাচ্ছে আমরা কিছুই দেখছি না। তারা (অদৃশ্য কিছু) আমাদের সামনেই আগুন জ্বালিয়ে দিচ্ছে। আমরা সবাই বসা অবস্থায় আমাদের সামনেই আগুন লাগছে।

প্রতিবেশী মুদি দোকানদার জাকির হোসেন বলেন, জিন অদৃশ্য ক্ষমতায় এমন আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা শাহাবুদ্দিন বলেন, ২-৩ দিন আগে দুইজন নারী ও শিশুর গায়ে আগুন লাগিয়েছে অদৃশ্য শক্তি। এ গ্রামে আর কোথায়ও এমন আগুন লাগার ঘটনা ঘটেনি শুধু এ দুই ঘরেই আগুন লাগছে।

স্থানীয় মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা মো. লিয়াকত হোসেন বলেন, আগুন জ্বলতে আমি নিজেও দেখেছি। তাদের ঘরের লেপ-তোশক, আসবাবপত্রে আগুন জ্বলে। 

আমিও কয়েকবার আগুন নিভিয়েছি। আগুন থেকে রক্ষা পেতে তাদের বেডিংপত্র রাখা হয় মসজিদে। মসজিদে পর্যন্ত তাদের বেডিংপত্রে আগুন লাগে। আমরা কয়েকবার কুরআন তেলোয়াত দোয়া-দরুদ পাঠ করেছি। গরু জবাই করে এলাকাবাসীকে খাওয়ানো হয়েছে তাতেও রক্ষা হয়নি।

ফরিদগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের লিডার কামরুল হাসান বলেন, অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছি। আগুনের কোনো সূত্রপাত খুঁজে পাইনি। এলাকাবাসীর কাছ থেকে জানতে পারেছি, কে বা কারা আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে অদৃশ্যভাবে। বিষয়টি আমি আমার কৃর্তপক্ষকে জানিয়েছি।

চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সহ-সভাপতি ও স্থানীয় বাসিন্দা আলিম আজম রেজা বলেন, আমি নিজে ঘটনাস্থলে গিয়ে এ দৃশ্য দেখে অবাক হয়েছি। আমি ভালো করে পর্যবেক্ষণ করেছি, বিদ্যুতের কোনো তারে আগুন লাগার দৃশ্য নেই।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে