চাঁদপুর: চাঁদপুরের মতলব উত্তরে ব্যাংকের এক কর্মকর্তা প্রায় পৌনে এক কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছেন। এই ঘটনার দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অভিযুক্ত ওই কর্মকর্তার কোনো খোঁজ মিলছে না।
ছেঙ্গারচর বাজারে অগ্রণী ব্যাংক পিএলসি লিমিটেড ওই শাখার ভল্ট থেকে ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা নিয়ে পালানোর অভিযোগ উঠেছে ক্যাশিয়ারের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ওই শাখার ব্যবস্থাপক মো. ইউসুফ মিয়া গত ২ সেপ্টেম্বর তারিখে বাদী হয়ে মতলব উত্তর থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
তবে ঘটনার দেড় মাস পার হলেও এখনো খোঁজ মেলেনি অভিযুক্ত ক্যাশিয়ারের। টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়া অভিযুক্ত দীপংকর ঘোষ ছেংগারচর বাজার শাখার অফিসার (ক্যাশ) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটি গ্রামের বলাই ঘোষের ছেলে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ২৯ আগস্ট বৃহস্পতিবার দীপংকর ঘোষ ব্যাংকে না এলে তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নম্বরে ব্যাংকের ব্যবস্থাপক কল করলে তিনি জানান, ‘বাবা অসুস্থ, আসতে দেরি হবে।’
দীর্ঘ সময় পর্যন্ত ব্যাংকে না এলে পুনরায় দীপংকর ঘোষের মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। একপর্যায়ে প্রকৃত অবস্থান জানার জন্য দীপংকর ঘোষের স্ত্রী আঁখি সাহার মোবাইল ফোনে কল দিলে তিনি জানান, ‘আমার স্বামী দুপুর ১২টার সময় অফিসের উদ্দেশে ঢাকার বাসা ত্যাগ করেন।’
বিকেল হয়ে গেলেও দীপংকর ব্যাংকে উপস্থিত না হওয়ায় ব্যাংকের ভল্ট খোলা সম্ভব হয়নি। পরে তাঁর কার্যকলাপে সন্দেহ মনে হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ব্যবস্থাপক।
দীপংকর ঘোষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ার পর ব্যাংকের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা এবং ব্যাংকের ভল্টে থাকা নগদ টাকার পরিমাণ যথাযথ আছে কি না, তা যাচাইয়ের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরামর্শে গত ৩০ আগস্ট মতলব উত্তর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়।
গত ১ সেপ্টেম্বর জিডির পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও থানা-পুলিশের উপস্থিতিতে মিস্ত্রি দিয়ে ভল্ট খোলা হয়। পরে গণনা করে ভল্টে ২৭ লাখ ৭৯ হাজার ৬৮ টাকা ৭১ পয়সা পাওয়া যায়। অথচ ক্যাশে ১ কোটি ২ লাখ ৯৯ হাজার ৬৮ টাকা ৭১ পয়সা ছিল। অর্থাৎ, ক্যাশ পজিশন অনুযায়ী গণনার সময় ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা কম পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে অগ্রণী ব্যাংক পিএলসি লিমিটেড ছেংগারচর বাজার শাখা ব্যবস্থাপক মো. ইউসুফ মিয়া জানান, ‘এ বিষয়ে আমি বাদী হয়ে মতলব উত্তর থানায় একটি মামলা করেছি। ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসে অডিট করে গেছেন এবং থানার পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে।’
ঘটনা সম্পর্কে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মতলব উত্তর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ছানোয়ার হোসেন জানান, ব্যাংকের ক্যাশিয়ার দীপংকর ঘোষ ও অজ্ঞাতনামা আসামি করে থানায় একটি মামলা হয়েছে। মামলার তদন্ত কার্যক্রম চলছে বলেও জানান তিনি।