বৃহস্পতিবার, ৩১ মার্চ, ২০১৬, ০৮:৪১:২৮

সদর ও হাইমচরে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ, প্রিজাইডিং অফিসারকে মারধর

সদর ও হাইমচরে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ, প্রিজাইডিং অফিসারকে মারধর

শরীফুল ইসলাম, চাঁদপুর প্রতিনিধি: চাঁদপুর সদর ও হাইমচরে দুই উপজেলার ১৮ ইউনিয়নে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। এ সময় বিভিন্ন কেন্দ্রে সংঘর্ষ, প্রিজাইডিং অফিসারকে মারধর, ব্যালটসহ বাক্স ছিনতায়ের ঘটনা ঘটেছে। এসব পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ১৩ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়েছে। এছড়াও তিনটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে । চাঁদপুরের সদরের শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের লোধেরগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের ব্যালটবাক্স ও ব্যালট পেপার ছিনতাই করার সময় পুলিশ বাঁধা দিলে সংঘর্ষ হয়। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৩ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়েছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
চাঁদপুর সদরের ১২টি ইউনিয়নে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিভিন্ন অনিয়মের কারণ দেখিয়ে   যে চেয়ারম্যান প্রার্থীরা নির্বাচন বয়কটের  ঘোষণা দিয়েছেন। এর মধ্যে বিএনপির ৬ প্রার্থী সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন বয়কটের ঘোষণা দেন। সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন বয়কটের ঘোষণা দেন চাঁদপুর সদর উপজেলার বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. শামছুল ইসলাম মণ্টু পাটোয়ারী।
এ সময় বিএনপির চারজন ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী উপস্থিত ছিলেন এবং চাঁদপুরের তরপুরচ-ী ইউনিয়নের ৩ প্রার্থী নির্বাচন বয়কটের ঘোষণা দেন। এরা হচ্ছেন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মুজিব কাজী, ইসলামী আন্দোলনের চেয়ারম্যান প্রার্থী মারূফ, বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থী সরদার রফিকুল ইসলাম।
আশিকাটি ইউনিয়নের বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলওয়ার মাস্টার, বাগাদী ইউনিয়নের বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থী মোহাম্মদ আলী পাঠান, এছাড়াও চাঁদপুর সদর উপজেলার কল্যাণপুর ইউনিয়নের বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থী সাইফুল আলম খান, জাকির হোসেন তালুকদার, ইসলামী আন্দোলনের জামিল আহমেদ, চান্দ্রা ইউনিয়নের বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহজাহান খান, রামপুর ইউনিয়নের বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থী জাকির হোসেন তালুকদার। বাগাদী ইউনিয়নের ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর চেয়ারম্যান প্রার্থী জাহাঙ্গীর গাজী।
অপরদিকে সদরের চান্দ্রা ইউনিয়নের দক্ষিণ বালিয়া নরসিংপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ দলীয় দুই মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এ সময় ২টি বোমা বিস্ফোরিত হয়। তবে এতে কেউ আহত হয়নি। এদিকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরভী ইউনিয়নের ৫নং আজিজিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার এম মান্নাফকে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকরা মারধর করে ব্যালটবাক্স ও ব্যালট পেপার ছিনতাই করার অভিযোগে কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়।
পুলিশ সুপার শামছুন্নাহার জানান, চাঁদপুর সদর ও হাইমচরে দুই উপজেলার  মোট ১৭৬টি কেন্দ্রের মধ্যে সবগুলোকেই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে ধরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। যদিও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে মোট ১৩৭ কেন্দ্রকে গুরুত্বপূর্ণ বা ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪২টি কেন্দ্র বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে পড়েছে। মাত্র ৩৯টি কেন্দ্রকে সাধারণ কেন্দ্র হিসেবে সনাক্ত করা হয়েছে বলে জানান।
এসব কেন্দ্রে ৪ হাজার ৭শ ৭০জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে কাজ করছে। এদের মধ্যে ৪৫ সদস্যের ৯ প্লাটুন বিজিবি, ৪৮ জন র‌্যাব, পুলিশ ১৩শ’ ১৪ জন। এছাড়া ৬ জন নিবার্হী ম্যাজিস্ট্রেট ও ২ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে কাজ করছেন।
 এদিকে হাইমচরে চরভৈরবী আজিজিয়া মাদরাসা কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার কে এম মান্নাতকে মারধর করে ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের অভিযোগে ওই কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। এছাড়াও চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার ১নং গাজীপুর ইউনিয়নে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী ও ১২ সদস্য প্রার্থী নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। তাদের ভোটার ও সমর্থকদের কেন্দ্রে যেতে বাধা দেয়ায় রিটার্নিং অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়ে ভোট বর্জন করেন এসব প্রার্থী। এছাড়াও ২নং আলগী দুর্গাপুর উত্তর ইউনিয়নের জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান প্রার্থী খাজা আহমেদ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে নির্বাচন বয়কটের ঘোষণা দেন।
৩১ মার্চ, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এইচএস/কেএস

 

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে