ঢাকা : ‘ভাই আমার পেটটা মাঝখান দিয়ে কাইট্যা দেন, বাতাসটা বাইর করেন, আমি আর বাঁচতাছি না।' এভাবেই নিজের পেট থেকে বাতাস বের করার আকুতি জানান ঠিকাদার আতিয়ার রহমান মোল্লা (২৮)।
পাশেই তার স্ত্রী শিমু আক্তারের আহজারি-‘ভাই যেকোনো মূল্যে আমার স্বামীরে বাঁচান। আপনাগো আল্লার দোহাই লাগে। আমার স্বামীরে বাঁচান।'
বুধবার স্বামী-স্ত্রী দু'জনেই এভাবে বাঁচার আকুতি জানান সাংবাদিকদের কাছে। রাজধানীর ভাটারায় ফার্নিচার দোকানের কর্মচারীর মসকরায় মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন ঠিকাদার আতিয়ার। তার অবস্থা সংকটাপন্ন।
প্রসঙ্গত, গত ২৪ জুলাই নারায়ণগঞ্জে ১০ বছরের শিশু সাগর বর্মণকে পায়ুপথে বাতাস ঢুকিয়ে হত্যার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার ঘটল ভাটারায়।
এইকভাবে গত বছরের ৩ আগস্ট খুলনায় ১২ বছরের শিশু রাকিব হাওলাদারকে পায়ুপথে বাতাস ঢুকিয়ে হত্যা করা হয়।
ঠিকাদার আতিয়ার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
আতিয়ার মোল্লার গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ী সদরের মাইছাকাটা গ্রামে। স্ত্রীকে নিয়ে ভাটারা থানার নতুন বাজার মোড় এলাকায় ভাড়া থাকেন তিনি।
বিভিন্ন ফার্নিচারের দোকানে কাঠ সরবরাহের ঠিকাদারি করতেন। বুধবার দুপুর একটার দিকে ভাটারা মোড়ে আকতার ফার্নিচার্স লিমিটেডের শোরুমে কাঠ নিয়ে যান তিনি।
এসময় দোকান কর্মচারী মামুন কম্প্রেসার দিয়ে বিভিন্ন ফার্নিচার পরিষ্কার করছিলেন। কোনো কথাবার্তা ছাড়াই কম্প্রেসারের মুখ চেপে ধরে আতিয়ারের পায়ু পথে। সঙ্গে সঙ্গে তার পেট ফুলে শক্ত হয়ে যায়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও আকতার ফার্নিচারের কর্মচারী মো. মমিন মিয়া জানান, তারা ওই দোকানে ১২ থেকে ১৩ জন কর্মচারী কাজ করছিলেন। ওই সময় মামুন নামে তাদের এক সহকর্মী কমপ্রেসার মেশিন দিয়ে আসবাবপত্রের ময়লা পরিষ্কর করছিল।
ঠিকাদার আতিয়ার মোল্লা দুপুরে কাঠ নিয়ে সেখানে যান। ঠাট্টা মসকারা করতে করতে মামুন আতিয়ার মোল্লার পায়ুপথে কমপ্রেসার মেশিন চেপে ধরে।
এতে সঙ্গে সঙ্গে তার পেট ফুলে শক্ত হয়ে যায়। মাগো বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার শুরু করেন তিনি। দোকানকর্মীরা ভয় পেয়ে তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে নিয়ে যায়।
বিকেল ৫টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, মামুনের অবস্থা খুবই সংকটাপন্ন। তার পেট ফুলে শক্ত হয়ে আছে। জরুরি ভিত্তিতে তার অস্ত্রপচার করাতে হবে। পেটের কোনো নাড়িভূড়ি ছিঁড়ে গেলে তাকে বাঁচানো কঠিন হয়ে পড়বে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ মো. বাচ্চু মিয়া জানান, আতিয়ারের পেট অস্বাভাবিকভাবে ফুলে শক্ত হয়ে গেছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
ভাটারা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জিয়া উদ্দিন জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে খোঁজ নেয়া হয়েছে। অভিযুক্ত মামুনকে আটকের চেষ্টা চলছে। ঘটনা ঘটানোর পর সে পালিয়ে গেছে।
২৪ আগস্ট,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম