বৃহস্পতিবার, ২৫ আগস্ট, ২০১৬, ০১:০৫:৫৬

রোগী সেজেও শেষ রক্ষা হলো না মজিবের

রোগী সেজেও শেষ রক্ষা হলো না মজিবের

নিউজ ডেস্ক : কোমরে বিশেষ কায়দায় রাখা ছিল ২৩ কেজি সোনা। এই ভার বহন করা সম্ভব ছিল না। হাঁটাহাঁটি করতে কষ্ট হবে। তাই রোগীর বেশ ধরেন মজিব মো. আতাউল (৩২)। এ জন্য তিনি সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের উড়োজাহাজে ওঠেন হুইলচেয়ারে করে। কিন্তু গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গ্রিন চ্যানেলের সামনে শুল্ক কর্মকর্তাদের হাতে ধরা পড়েন মজিব।

নীলফামারীর সৈয়দপুরে ধনাঢ্য ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত মজিব। সেখানে তিনি আতাউল মো. তুহিন নামে পরিচিত।

শুল্ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ধরা পড়ার সময় অসুস্থতার ভান করেছিলেন মজিব। তবে যখন তাঁর কাছ ২২৫টি সোনার বার জব্দ করা হয়, তখন জেরা করা হলে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে থাকেন তিনি। এরপরও অসুস্থতা বোঝাতে বেশ কিছু কাগজ দেখাতে থাকেন শুল্ক কর্মকর্তাদের।

মজিবকে গ্রেপ্তারে নেতৃত্ব দেন ঢাকা কাস্টম হাউসের প্রিভেনটিভ দলের প্রধান ও সহকারী কমিশনার এ এইচ এম আহসানুল কবির। তিনি বলেন, মজিবের শরীরে কোনো রোগের লক্ষণ ছিল না। যেহেতু ২৩ কেজি সোনা বহন করতে তাঁর কষ্ট হবে, হাঁটাচলায় সন্দেহ হতে পারে, তাই অন্য কৌশল বেছে নেন। রোগীর বেশ ধরেন। ভাবেন, হুইলচেয়ারে বসলে রোগীর হয়তো জেরা করা হবে না। উল্টো বিমানবন্দরে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সমবেদনা পাওয়া যাবে। এতে বিমানবন্দর থেকে দ্রুত বেরিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে। এসব কারণে রোগীর বেশ ধরেন মজিব। কোমরে সোনার বার রাখতে বিশেষভাবে তৈরি মজিবের বেল্টটি। নাইলনের তৈরি বেল্টটি প্রায় ছয় ইঞ্চি চওড়া। এটি লম্বায় প্রায় তিন ফুট। এই বেল্টেই রাখা ছিল ১০০ গ্রাম ওজনের ২২৫টি সোনার বার। তা ছাড়া মজিবের প্যান্টের ভেতর বেশ কিছু সোনার গয়নাও পাওয়া যায়। সব মিলিয়ে ২৩ কেজি সোনার বর্তমান মূল্য প্রায় সাড়ে ১১ কোটি টাকা। এ ঘটনায় মজিবকে আসামি করে আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিমানবন্দর থানায় মামলা করে শুল্ক কর্তৃপক্ষ।

সহকারী কমিশনার এ এইচ এম আহসানুল কবির বলেন, জব্দ হওয়া সোনার মালিক নিজে নন বলে দাবি করেন মজিব। তাঁকে বহন করতে দেওয়া হয়েছিল। সোনার প্রকৃত মালিক সম্পর্কেও কোনো তথ্য দেননি তিনি। তবে মজিবের পাসপোর্ট থেকে জানা গেছে, তিনি প্রায়ই সিঙ্গাপুর ও নেপাল যাতায়াত করছেন। সৈয়দপুরে নিজের ফোন-ফ্যাক্সর দোকান রয়েছে বলে জানান মজিব। তাঁর বাবার নাম তোফাজ্জল হোসাইন সরকার। সৈয়দপুরের শহীদ আমিনুল হক সড়কের নতুন বাবুপাড়ায় মজিবের বাড়ি।

প্রথম আলোর সৈয়দপুর প্রতিনিধি এ আর আলম ঝন্টু জানান, সৈয়দপুরের শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়কে সরকার ট্রাভেলস নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক মজিব। পারিবারিকভাবে তাঁদের পাটকল, কাগজের কারখানা ও গুলের ব্যবসা রয়েছে। -প্রথম আলো
২৫ আগস্ট, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে