সাইফ বরকতুল্লাহ : গার্লফ্রেন্ড বিহীন তরুণের পৃথিবীতে বেঁচে থাকা, ঘাসবিহীন মাঠে গরুর পায়চারির মত- হুমায়ূন আহমেদ হয়তো কথাগুলো অনুভব করেই বলেছিলেন। কিংবা আমরা যদি কবি জয় গোস্বামীর ‘পাগলী, তোমার সঙ্গে’ কবিতাটি পড়ি সেখানে তিনি বলেছেন, ‘নতুন মেয়ের সঙ্গে দেখা করব লুকিয়ে চুরিয়ে/ধরা পড়ব তোমার হাতে, বাড়ি ফিরে হেনস্তা চরম/পাগলী, তোমার সঙ্গে ভ্যাবাচ্যাকা জীবন কাটাব/পাগলী, তোমার সঙ্গে হেস্তনেস্ত কাটাব জীবন।’
আসলে ভালোবাসার জীবনটাই এরকম। সারা দিন ক্লাস, পরীক্ষা, প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করার সময় কই। কিন্তু পাগল মন কি মানে প্রিয়ার দেখা ছাড়া। সময় বের করেই প্রিয়ার সঙ্গে কাটায় প্রেমিক যুগল। কয়েকদিন আগে গিয়েছিলাম রাজধানীর হাতিরঝিলে। সেখানে দেখলাম ভালোবাসার নতুন ভুবন। এ ভুবনে অনেকেই এসেছেন প্রকৃতির সঙ্গে কিছুটা সময় কাটাতে। সঙ্গে অনেকেই নিয়ে এসেছিলেন ভালোবাসর মানুষকে। তাদেরই একজন ডরোথী (ছদ্মনাম)। চাকরি করেন একটি বেসরকারি কোম্পানিতে। কথা হয় তার সঙ্গে।
তিনি বলেন, ‘মঈনের (ছদ্মনাম) সঙ্গে আমার তিন বছরের সম্পর্ক। মাঝে মাঝেই আমরা এখানে ঘুরতে আসি। ঝিলটায় এসে মুহূর্তগুলো আনন্দে কাটানো যায়।’
সেদিন ছিল ঝুম বৃষ্টি। ঘুরতে ঘুরতে সন্ধ্যা হয়ে যায়। সন্ধ্যার পরই লাল-নীল-সবুজ-হলুদ বাতি জ্বলে উঠে। সামনে কিছুদূর গিয়ে দেখি নীলা ও নাঈম (দুজনেরই ছদ্মনাম) ঘাসের ওপর বসে কথা বলছেন। জিজ্ঞেসে করতেই বলে, ভাই নামটা লিখবেন না প্লিজ। আমি বললাম ওকে। নীলা নঈম জানায় তাদের প্রেমের গল্প। পাঁচ বছর আগে তাদের প্রথম দেখা বসুন্ধরার একটি কনসার্টে। সেখানে তারা দুজন পরিচয়ের পর ফেসবুকে তাদের মাঝে মাঝেই কথা হতো। একপর্যায়ে তারা মাঝে মাঝে দেখাও করতেন। এভাবে চলে দুই বছর। তারা দুজনই এখনো পড়াশোনা করছেন। নীলা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। নাঈম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।
হাতিরঝিলে কি প্রায়ই আসেন জিজ্ঞেস করতেই বলে, হ্যাঁ, মাঝে মাঝেই আসা হয়। এখানে বিকেলে সময় কাটানোর আনন্দই অন্যরকম। কেন প্রায়ই আসেন এখানে- উত্তরে নাঈম বলেন, ঢাকার অনেক জায়গায় গিয়েছি। কিন্তু হাতিরঝিলে আসলে প্রেমের পূর্ণতা পাওয়া যায়। এই যে দেখেন কতজনই তো এখানে এসেছে। এত্তো প্রেমিক যুগল দেখে তো মনে হচ্ছে যেন ভালোবাসর হাট বসেছে। নাঈমের কথা শুনে নীলা হো হো করে হেসে উঠল। আমি বিদায় নিলাম তাদের কাছ থেকে।-রাইজিংবিডি
০৭ অক্টোবর,২০১৬/এমটি নিউজ২৪ ডটকম/এইচএস/কেএস