ঢাকা : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে সে দেশে চারদিনের সরকারি সফর শেষে আজ বিকেলে দেশে ফিরেছেন।
প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের ভিভিআইপি ফ্লাইটটি সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এর আগে ফ্লাইটটি স্থানীয় সময় বিকেল পৌনে পাঁচটায় নয়াদিল্লীতে ভারতীয় বিমান বাহিনীর পালাম স্টেশন ত্যাগ করে।
প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানাতে পালাম স্টেশনে উপস্থিত ছিলেন ভারতের ভারী শিল্প ও সরকারি প্রতিষ্ঠান বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়, নয়াদিল্লীতে বাংলাদেশী হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী ও ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রীংলা।
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম ও আওয়ামী লীগ সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ফারুক খান অন্যান্য নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বিমানবন্দরে উপস্থিত থেকে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।
পরে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ফেরার পর দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ তাঁকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
এই সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করেন এবং ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি ও উপ-রাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
এ সময় ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি সোনিয়া গান্ধী, ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। দুদেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে হায়দরাবাদ হাউসের বলরুমে বৈঠক শেষে ঢাকা ও নয়াদিল্লীর মধ্যে ৩৪টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
শেখ হাসিনা ব্রিটিশ শাসিত ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অবিসংবাদিত নেতা মহাত্মা গান্ধীর রাজঘাটস্থ সমাধিতে ফুল দিয়ে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানান। দুই প্রধানমন্ত্রী জাতির জনকের আত্মজীবনীমূলক বই ‘বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী-এর হিন্দি সংস্করণের মোড়ক উন্মোচন করেন।
শেখ হাসিনা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর শহীদ সদস্যদের প্রতি সম্মান জানান। প্রধানমন্ত্রী রাজস্থানে আজমীর শরীফে যান এবং খাজা মঈনুদ্দিন চিশতি (রহ.) মাজার জিয়ারত করেন।
শেখ হাসিনা তাঁর সম্মানে ভারতের রাষ্ট্রপতির দেয়া নৈশভোজে অংশ নেন। তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী দেয়া এক ভোজসভায় অংশ নেন। প্রধানমন্ত্রী ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন আয়োজিত তাকে দেয়া এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগদান করেন এবং নয়াদিল্লীতে এক বিজনেস অনুষ্ঠানেও অংশ নেন।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর এটাই তার সরকারি পর্যায়ে প্রথম ভারত সফর। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এর আগে ২০১০ সালের জানুয়ারিতে এক সরকারি সফরে ভারত যান। ২০১৫ সালে ফিরতি সফরে বাংলাদেশে আসেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
১০ এপ্রিল ২০১৭/এমটি নিউজ২৪/এসএস