ঢাকা: কোমরে জোড়া লাগানো শিশু তৌফা-তহুরাকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আলাদা করার পর তাদের জ্ঞান ফিরেছে। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে জ্ঞান ফেরার পর তারা কান্নাকাটিও করেছে। চিকিৎসকরা বলছেন, সুস্থ আছে শিশু দুটি।
১ আগস্ট মঙ্গলবার সকাল থেকে ছয় ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে অস্ত্রোপচার করা হয় শিশু দুটির দেহে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) এক দল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে গাইবান্ধায় জন্ম নেওয়া শিশু দুটিকে আলাদা করা হয়।
শিশু সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. আবদুল হানিফ টাবলু জানিয়েছেন, অস্ত্রোপচার শেষে দুজনের জ্ঞান ফিরেছে। জ্ঞান ফেরার পর কান্নাকাটিও করেছে। অস্ত্রোপচারের পর শিশু দুটিকে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হয়েছে। সেখানে তাদের অবস্থা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে।
জানা যায়, দুই দফায় শিশু দুটির দেহে অস্ত্রোপচার করা হয়। সকাল ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তাদের আলাদা করা হয়। পরবর্তীতে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত দ্বিতীয় দফা অস্ত্রোপচারে তাদের অসম্পূর্ণ অংশ ঠিক করা হয়।
দশ মাস বয়সী শিশু দুটির মাথা, হাত, পা আলাদা হলেও কোমর থেকে জোড়া লাগানো ছিল। তাদের মেরুদণ্ড সংযুক্ত থাকায় অস্ত্রোপচার বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক কানিজ হাসিনা শিউলি সাংবাদিকদের বলেন, ‘তৌফা ও তহুরার স্পাইনাল কর্ড ও মেরুদণ্ড আলাদা করতে পেরেছি। এ পর্যন্ত যতটুকু সম্পন্ন হয়েছে, তা সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। শিশু দুটি ভালো আছে।’
এর আগে ঢামেক বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন সকালে জানিয়েছিলেন, শিশু সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. আশরাফুল হক কাজলের নেতৃত্বে একদল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সার্বিক তত্ত্বাবধানে অস্ত্রোপচার চলে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়নের ঝিনিয়া গ্রামের রাজু মিয়ার স্ত্রী সাহিদা বেগম নিজ বাড়িতে জোড়া লাগানো অবস্থায় দুই কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। এই দম্পত্তির পাঁচ বছর বয়সী আরেকটি ছেলে সন্তান রয়েছে।
এমটিনিউজ২৪ডটকম/টিটি/পিএস