নিউজ ডেস্ক : বিরল রোগে আক্রান্ত মুক্তামনির হাতে সফল অস্ত্রোপচার হয়েছে। শনিবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে তার অস্ত্রোপচার শুরু হয়। বেলা সোয়া ১১টার দিকে তার অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়।
জ্বর, শ্বাসকষ্টসহ নানা জটিলতা দেখা দিলেও অস্ত্রোপচারের ধকল বেশ কাটিয়ে উঠেছে মুক্তামণি। মুক্তামণির বাবা ইব্রাহিম হোসেন জানালেন, মুক্তামণি ভালো আছে। বর্তমানে মুক্তামণি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) আছে।
মুক্তামণির বাবা ইব্রাহিম হোসেন বলেন, সোমবার রাতে মুক্তামণির বেশ জ্বর শ্বাসকষ্ট ছিলো। তবে মঙ্গলবার সারাদিন তেমন কোনো সমস্যা হয়নি। এখন জ্বরও নেই। মুক্তামণি সুযোগ পেলেই অনেক কথা বলছে। কথা বলতে পারলেই বেশি ভালো থাকে।
ইব্রাহিম বলেন, ‘মুক্তামণিকে বললাম, প্রধানমন্ত্রী তোমাকে যে চকলেট দিয়েছেন তা খাবে না? সে উত্তর দিলো, ওই লজেন্সগুলো খাবো না। খাইলে তো ফুরাইয়া যাবে। বাড়ি ফিরে সবাইকে দেখাইতে হবে প্রধানমন্ত্রী আমার জন্য চকলেট পাঠাইছেন।’
অস্ত্রোপচারের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তামণিকে শুভকামনা জানিয়ে বার্ন ইউনিটের কেবিনে চকলেট পাঠিয়েছিলেন। তখনই মুক্তামণি কিছু চকলেট আলাদা করে গুছিয়ে রেখেছে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য।
ন্যাশনাল বার্ন ইউনিটের প্রকল্প পরিচালক ও বিশেষজ্ঞ প্লাস্টিক সার্জন অধ্যাপক ডাক্তার আবুল কালামের নেতৃত্বে ১৩ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মুক্তামনির শনিবারের অস্ত্রোপচারে অংশ নেন।
অস্ত্রোপচার শেষে বার্ন ইউনিটের সমন্বয়কারী ডা. সামন্ত লাল সেন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, মুক্তার হাত রক্ষা করে মাংস কেটে ফেলা সম্ভব হয়েছে। তার হাত ঠিক আছে। অস্ত্রোপচার পর মুক্তার জ্ঞান ফিরেছে। সে চিকিৎসকদের কথায় সাড়া দিচ্ছে।
এর আগে গত ৫ আগস্ট মুক্তামনির প্রথম সফল অস্ত্রোপচার হয়। সেই অস্ত্রোপচারে বার্ন ইউনিটের সমন্বয়কারী ডা. সামন্ত লাল সেন, বার্ন ইউনিটের বর্তমান পরিচালক আবুল কালাম আজাদসহ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা ছিলেন।
সাতক্ষীরার মেয়ে মুক্তামনির দেহে জন্মের দেড় বছর পর একটি ছোট মার্বেলের মতো গোটা দেখা দেয়। এরপর সেটি গাছের গুড়ির রূপ নিয়ে বড় হতে হতে ডান হাত শরীরের চেয়ে ভারী হয়ে উঠেছে। তার এই বিরল রোগ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে তাকে ঢাকায় পাঠিয়ে সরকারি ব্যবস্থাপনায় চিকিৎসার উদ্যোগ নেয়া হয়।
১১ জুলাই সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে ঢাকায় আনা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তামণির চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। ১২ জুলাই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর দেখা গেছে লিমফেটিক ম্যালফরমেশন রোগে ভুগছে মুক্তামনি। এটি একটি জন্মগত রোগ।
এমটিনিউজ২৪ডটকম/টিটি/পিএস