রবিবার, ০২ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:৪৩:৩৪

পুরান ঢাকার কারাগারে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা

পুরান ঢাকার কারাগারে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা

নিউজ ডেস্ক: পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারের অস্থায়ী আদালতের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অব ইন্টিলিজেন্স (এফবিআই) এর চার সদস্যের প্রতিনিধি দল। কারা সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

এফবিআইয়ের চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল শনিবার (১ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় কারাগারের ভেতরে প্রবেশ করে। প্রায় আধা ঘণ্টা সময় সেখানে অবস্থান করে বেরিয়ে যান তারা। কারা সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

কারা সূত্র জানায়, নাইকো দুর্নীতি মামলায় সাক্ষী দিতে এফবিআইয়ের কয়েকজন বাংলাদেশে আসবেন। তাদের নিরাপত্তার স্বার্থে এফবিআইয়ের প্রতিনিধি দল কারাগার পরিদর্শন করে। নাইকো মামলার প্রধান সাক্ষী ১১ ডিসেম্বর ঢাকায় পৌঁছাবেন। পরদিন ১২ ডিসেম্বর কোর্টে হাজির হবেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে থাকায় সেখানে অস্থায়ী আদালত বসানো হয়েছে। সেখানেই নাইকো দুর্নীতি মামলার বিচারিক কার্যক্রম চলছে।

গত ২২ নভেম্বর বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে কানাডীয় প্রতিষ্ঠান নাইকোর কাছ থেকে ঘুষ নেয়ার অভিযোগে করা মামলায় কানাডীয় পুলিশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই একটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। প্রতিবেদনে তাদের বিরুদ্ধে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হয়।

ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ মাহমুদুল কবিরের আদালতে এ তদন্ত প্রতিবেদনটি জমা দেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমে। এ প্রতিবেদনের ওপর শুনানির জন্য আগামী ৯ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত।

মামলাটি ৩ জানুয়ারি অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য দিন ধার্য রয়েছে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, কানাডীয় প্রতিষ্ঠান নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় নাইকো দুর্নীতি মামলাটি করেন।

মামলা করার পরের বছর ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। পরে আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, বাগেরহাটের সাবেক সংসদ সদস্য এম এ এইচ সেলিম এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া-বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দুদকের দায়ের করা দুই মামলায় ১০ ও ৭ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন। আপিলে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৫ বছরের কারাদণ্ড বেড়ে ১০ বছর এবং জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিশেষ আদালতে ৭ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন তিনি।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণার পর পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরানো কেন্দ্রীয় কারাগারে খালেদা জিয়াকে বন্দি রাখা হয়। সেখান থেকেই গত ৬ অক্টোবর চিকিৎসকদের পরামর্শে খালেদা জিয়াকে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে নেয়া হয়। টানা এক মাস ২ দিন বিএসএমএমইউয়ে চিকিৎসা নেয়ার পর ৮ নভেম্বর তাকে কারাগারে ফিরিয়ে নেয়া হয়।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে