ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের ছাত্র ছিলেন কাওসার আহমেদ। প্রথম বর্ষে স্বপ্ন দেখতেন আকাশ ছোঁয়ার। পারিপার্শ্বিক বাস্তবতায় প্রত্যাশার সাথে মিল ঘটেনি। পরিবারের হাল ধরতে গিয়ে অধ্যায়নে কিছুটা ঘাটতি হলেও চেষ্টা করছিলেন সব কিছু কাটিয়ে ওঠে ব্যাংকার হতে।
কিন্তু বুধবার চকবাজারের ভয়াবহ আগুন কেড়ে নিয়েছে তার সব স্বপ্ন। কাওসার বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারদা সূর্য সেন হলের ছাত্র ছিলেন। সদা চঞ্চল এ শিক্ষার্থী প্রথম বর্ষে হলের গণরুম (এক কক্ষে ২৫ জন থাকত, ১৮১) মাতিয়ে রাখতেন। যেমনটি বলছিলেন তার বন্ধু দর্শন বিভাগের ছাত্র সৈয়দ শরিফুল আলম শপু। পরবর্তীতে পরিবারের দায়িত্ব নিতে গিয়ে চকবাজার শাহী জামে মসজিদ এলাকায় দেন আল-মদিনা ফার্মেসি।
সবকিছু সামলে উঠতে গিয়ে এক বছর বিরতি দিয়ে ২২তম ব্যাচের এ সেকশনে ক্লাস করতেন তিনি। তার স্মৃতি নিয়ে বিভাগের বন্ধু আসলাম হোসেন বলেন, কষ্টে বুকটা ফেটে যাচ্ছে। কিছুতেই চোখের পানি ফেরাতে পারলাম না। খুব সুন্দর সাবলীল মনের মানুষ ছিল বন্ধু কাওসার। কালও (বুধবার) একসাথে মিডটার্ম পরীক্ষা দিয়েছি আমরা। ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড এভাবে কেড়ে নেবে আমার বন্ধুটাকে তা কল্পনারও বাইরে ছিল।
কুমিল্লার হোমনা উপজেলার এ শিক্ষার্থী তৃতীয় বর্ষে থাকাকালীন বিয়ে করেন। ছিল ১১ মাস বয়সী যমজ বাচ্চাও। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে লাশ শনাক্তের জন্য এলে কাওসারের ভাই হাফিজ আহমেদ, স্ত্রী ও মায়ের আহাজারিতে সৃষ্টি হয় হৃদয়বিদারক পরিস্থিতি।
দুপুর আড়াইটায় তার লাশ বিজনেস অনুষদে নিয়ে এলে তার সহপাঠীরা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। কাওসারের বন্ধু সালেহীন সাহাদাত ফাহিম বলেন, সে খুব ভালো বন্ধু ছিল। দ্বিতীয় বর্ষ থেকে সেভাবে হলে থাকত না। ব্যাংকার বা ভালো জব করার স্বপ্ন দেখত।
বিকেলে বিজনেস অনুষদে জানাজা শেষে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তার সহপাঠীরা।