রাজধানীর চকবাজারের কাপড় ব্যবসায়ী মাসুদুর রহমান রাজু। তার ছোট ভাই মাসুদ রানা। রানা টেলিকম নামে একটি মোবাইলের দোকানও চালাতেন তারা। বুধবার রাতে চুড়িহাট্টার ভয়াবহ আগুনে পুড়ে অঙ্গার হয় দুই ভাই।
প্রতিদিনের মতো দোকান গুছিয়ে দিনের কাজ শেষ করতে ব্যস্ত ছিলেন রাজু ও রানা। তখনই বিস্ফোরণ, আগুনের হলকা, স্ফুলিঙ্গ। আশপাশে কয়েকজনকে ভয়ে জড়সড় হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলেন।
দুই ভাই তাদের বাঁচাতে দোকানের ভেতরে নিয়ে আসেন। শার্টারও নামিয়ে দেন তার। কিন্তু ভয়াবহ আগুন থেকে বাঁচতে পারেননি কেউ। ধোঁয়ায় দম বন্ধ হয়ে সেখানেই মারা যান তারাসহ মোট আটজন।
দুই ভাইয়ের চাচা আবদুর রহিম জানান, মাসুদ রানা ১৫ দিন আগে বিয়ে করেছিলেন।
তিনি বলেন, আমার ভাইয়ের ছেলেরা আগুনের স্ফুলিঙ্গ আর বিস্ফোরণের শব্দ শুনে আশপাশের ভীত-সন্ত্রস্ত ছয়জনকে দোকানের ভেতরে ডেকে নেন। এরপর তারা দোকান বন্ধ করেন বাঁচার আশায়। কিন্তু তারা কেউ বাঁচতে পারেনি। ধোঁয়া আর আগুনে তারা সেখানেই মৃত্যু বরণ করে।
বুধবার রাত সাড়ে ১০টার পর চকবাজারের নন্দকুমার দত্ত রোডের শেষ মাথায় মসজিদের পাশে ৬৪ নম্বর হোল্ডিংয়ের ওয়াহিদ ম্যানসনে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। পরে ভয়াবহ আগুন আশপাশের কয়েকটি ভবনে ছড়িয়ে পড়ে।
এতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৭০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ৬৭ জনের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। ২২ মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
রাজুর মরদেহের সিরিয়াল ৪০, রানার ১২। মরদেহ নিয়ে গ্রামের বাড়ি যাবে তাদের স্বজনরা। সেখানেই দাফন হবে বলে জানা যায়।