নিউজ ডেস্ক : বরগুনার আমতলী পৌর শহরের মাহেন্দ্র গাড়ি চালক খবির হোসেন হাওলাদারের মেয়ে সামসুন নাহার কনা দিনাজপুর মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মাহেন্দ্র চালক খবির হোসেনের মেয়ে সামসুন নাহার কনা একজন মেধাবী শিক্ষার্থী। তিনি আমতলী একে হাই সংলগ্ন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাইমারী সমাপনী পরীক্ষায় ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়ে আমতলী সরকারী একে হাই স্কুলে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হন। এই বিদ্যালয় থেকেই জুনিয়র সার্টিফিকেট পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে। তারপর ৯ম শ্রেণীতে বিজ্ঞান শাখায় ভর্তি হতে গেলে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বাবার আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে কনাকে বিজ্ঞান বিভাগ না নেয়ার জন্য বলেন। কিন্তু কনা বিজ্ঞান বিভাগ ছাড়া বিদ্যালয়ে ভর্তি হবেন না বলে জানান। বাধ্য হয়ে মেয়েকে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি করেন বাবা।
এসএসসি পরীক্ষায় সরকারী একে হাই স্কুল থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে উর্ত্তীন হন কনা। এরই ধারাবাহিকতায় কলেজে ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রেও কনা ঢাকায় পড়বেন বলে জানান। সুযোগও পেয়ে যান হলিক্রস, বিএফ শাহিন স্কুল এন্ড কলেজে।
আর্থিক দৈণ্যতার কারণে ভর্তি প্রায় অনিশ্চিত হলেও আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু বান্ধবদের সহযোগিতা নিয়ে তুলনামূলক কম খরচে পড়ার জন্য বিএফ শাহিন স্কুল এন্ড কলেজে ভর্তি হন কনা। এখান থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসি পাশ করে যথারীতি মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে দিনাজপুর মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন তিনি।
ছোট থেকেই কনার স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হওয়ার। সেই স্বপ্ন পূরণে সবচেষ্টা করলেও মাহেন্দ্র চালক বাবার আর্থিক অবস্থা তেমন ভাল নয়। প্রত্যেকটা সফলতা কনাকে দুশ্চিন্তা এবং অনিশ্চিয়তায় মধ্যে ফেলে দেয় এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। আগামী ২৪ অক্টোবরের মধ্যে তাকে ৪০ হাজার টাকা যোগার করতে হবে মেডিক্যালে ভর্তি হওয়ার জন্য। এত স্বল্প সময়ে তার বাবার পক্ষে এতগুলো টাকার ব্যবস্থা করা খুবই কষ্টকর। আর প্রয়োজনীয় টাকার ব্যবস্থা না হলে অনিশ্চিত হয়ে পরবে কনার মেডিক্যালে ভর্তি।
কনার বাবা বলেন, আমি আমার মেয়ের জেদের কাছে সব সময় হেরে গেছি। আমার মেয়ে যখন বুঝতে শিখেছে তখন থেকেই তার একটাই স্বপ্ন সে বড় হয়ে ডাক্তার হবে। আজ আমার মেয়ের সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে। মেয়ের সাফল্যে আমার বুকটা গর্বে ভরে যাচ্ছে। আমার সর্বস্ব বিক্রি করে হলেও আমি আমার মেয়ের স্বপ্ন পূরণ করবো।
কনা বলেন, আমি ছোট বয়সে একবার অসুস্থ্ হয়ে আমার পরিবারের সাথে হাসপাতালে গিয়ে একজন নারী চিকিৎসককে দেখতে পাই। তাকে দেখে আমি বড় হয়ে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখি। আল্লাহর ইচ্ছায় আজ আমার সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে। আমার গরিব বাবা আমাকে সব সময় সাপোর্ট দিয়েছেন। আমি যা বলেছি আমার মা-বাবা তা পূরণ করার চেষ্টা করেছেন। আমি যেন ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করতে পারি আল্লাহর কাছে এ প্রার্থনা করছি।