ঢাকা : ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস। দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত হয়ে তাপস ঢাকা-১০ আসনটি ছেড়ে দিয়েছেন। নিয়মানুযায়ী এই আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে।
রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এই আসনে উপনির্বাচন হবে শিগগিরই। এতে ক্ষ'মতাসীন দল থেকে মনোনয়ন পেতে দলের বেশ কয়েকজন হেভিওয়েট প্রার্থী আলোচনায় রয়েছেন। শেষ পর্যন্ত কে হবে এই আসনের সংসদ সদস্য সেটি নির্ভর করছে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার মনোনয়ন দেয়ার উপর।
ঢাকা-১০ আসনে টানা তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মনির ছেলে ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস। এর আগে এই আসনটি বিএনপির দ'খলে ছিল। তাপস এমপি হওয়ার পর এই আসনটি আওয়ামী লীগের দূর্গে পরিণত হয়।
তিনি এবার আসনটি ছেড়ে দেয়ায় স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে আলোচনা- কে পাচ্ছেন গুরুত্বপূর্ণ আসনটিতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন? বঙ্গবন্ধুর পরিবারের কেউ, নাকি প্রভা'বশালী দলীয় কোনো নেতা? এর জবাব কয়েকদিনের মধ্যেই মিলবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের কয়েক নেতা।
জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে রোববার দুপুরে পদত্যা'গপত্র জমা দেন ব্যারিস্টার তাপস। সেদিনই আসনটি শূন্য ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। আরপিও অনুযায়ী, কোনো আসন শূন্য ঘোষণার ৯০ দিনের মধ্যে ওই আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
আসনটি ঘিরে আলোচনায় আছেন ঢাকা-১৩ আসনের মনোনয়নব'ঞ্চি'ত এবং আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর নানক। একাদশ জাতীয় নির্বাচনে তিনি দলের নির্বাচন পরিচালনা টিমের দায়িত্ব পালন করেন। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ একটি আসনে দীর্ঘদিন জনপ্রতিনিধিত্ব করা নানককে দলীয় আনুগত্যের পুরষ্কার হিসেবে এবার ঢাকা-১০ আসনে নেত্রী মনোনয়ন দিতে পারেন এমন আলোচনা রয়েছে আওয়ামী লীগে।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-৪ আসনে দলীয় টিকিটে নির্বাচন করা আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরউল্লাহর নামও শোনা যাচ্ছে এই আসনে। ফরিদপুরে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন। জাফরউল্লাহ দলীয় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করায় বেশিরভাগ সময় ঢাকায়ই থাকেন। এ কারণে এই হেভিওয়েট নেতাকে ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ এই আসনে ভাবা হচ্ছে বলে একটি সূত্রে জানা গেছে।
ছোট ভাই তাপসের ছেড়ে দেয়া এ আসনে মনোনয়ন চাইতে পারেন তার বড় ভাই যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ। গত ২৩ নভেম্বর যুবলীগের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মনির বড় ছেলে শেখ পরশ ক্লিন ইমেজের। তার প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থা আছে।
এছাড়া এই আসনে প্রার্থী হতে পারেন বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি। বঙ্গবন্ধুর এই দৌহিত্র আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিআরআইয়ে সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করছেন।
এছাড়া প্রার্থী হিসেবে জোরালো সম্ভাবনা আছে তাপসের সহধর্মিণী আফরিন তাপসের। বিগত নির্বাচনে তিনি তাপসের পক্ষে মাঠে নেমেছিলেন। স্বামীর পক্ষে নৌকায় ভোট চেয়েছেন। ফলে ধানমণ্ডি, কলাবাগান, হাজারীবাগ ও নিউমার্কেট এলাকার প্রতিটি ভোটার তাকে চেনেন ও জানেন।
ঢাকা-১০ আসনে দলীয় মনোনয়ন কে পাচ্ছেন- জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ সোমবার বলেন, আসনটিতে কাকে মনোনয়ন দেয়া হবে তা এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। নির্বাচনের অনেক সময় বাকি মন্তব্য করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু পরিবারের কেউ নাকি বাইরে থেকে আসবে সেটি নিয়েও এখন কোনো আলোচনা হচ্ছে না। আমরা এখন ঢাকা সিটি নির্বাচন নিয়ে কাজ করছি।