ঢাকা : পাঁচ দিন আগে বিয়ে করেছেন ঢাকার ধামরাইয়ের ব্যবসায়ী মো. জুলহাস উদ্দিন। এর মধ্যেই অনশনরত প্রেমিকাকে বিয়ে করতে তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন জুলহাস। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ অমানবিক ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের সৈয়দের মোড় এলাকায়।
এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্র জানায়, মাত্র পাঁচ দিন আগে ১৫ নভেম্বর বালিয়া সৈয়দের মোড় এলাকার মো. আবুবকর সিদ্দিকের ছেলে ব্যবসায়ী মো. জুলহাস উদ্দিন কাবিন রেজিস্ট্রি করে একই উপজেলার দেওনাই গ্রামের মো. আবুল হোসেনের মেয়ে মোসাম্মৎ আকলিমা আক্তারকে বিয়ে করেন। এ খবর পেয়ে তার পুরনো প্রেমিকা চর টৌহাট গ্রামের বাসিন্দা মো. চাঁন মিয়ার মেয়ে ও ভালুম আতাউর রহমান খান স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্রী সীমা আক্তার ১৫ নভেম্বর বিকালে ওই বাড়িতে আসেন।
এরপর তিনি বিয়ের দাবিতে অনশন শুরু করেন। অবস্থা বেগতিক দেখে বাড়ির লোকজন বিয়ের দাবিতে অনশনরত ওই কলেজছাত্রীকে শারীরিক নির্যাতন করে বাড়ি থেকে তাড়ানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। পরে তারা ওই কলেজছাত্রীকে একা বাড়িতে রেখে বাড়ি ছেড়ে চলে যান। খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার পুলিশ ও সাংবাদিক ঘটনাস্থলে এলে ওই পরিবারের লোকজন অনশনরত কলেজছাত্রীর সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করেন স্থানীয় ইউপি মেম্বার মো. সজল মিয়ার মাধ্যমে।
ওই কলেজছাত্রীর দেয়া শর্তানুযায়ী ব্যবসায়ী জুলহাস বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তার বৈধ স্ত্রীকে তালাক প্রদান করে তাকে কাবিন রেজিস্ট্রি করে বিয়ে করেন। ঘটনাটি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। অনশনরত কলেজছাত্রী সীমা আক্তার জানান, প্রেমের জয় হয়েছে। সেই সঙ্গে আমিও বিজয়ী হলাম। এখন আমার আর কোনো অভিযোগ নেই আমার প্রেমিক স্বামীর ওপর। সে আমার শর্ত মেনে তার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে আমাকে বিয়ে করে স্ত্রীর মর্যাদা দিয়েছে। এতে আমি মহাখুশি।
প্রেমিক জুলহাস জানান, ''আমার কোনো উপায় ছিল না। তাই আমার রেজিস্ট্রি করা স্ত্রীকে তালাক দিয়ে প্রেমিকাকে বিয়ে করেছি। আমি পরিবারের চাপে পড়ে ওই মেয়েকে বিয়ে করে ঘরে তুলেছিলাম।'' তালাকপ্রাপ্ত নববধূ আকলিমা আক্তার জানান, ''আমার কপাল পুড়ে গেছে আমার স্বামীর নির্দয়তার কারণে। এরপরও আমি যুগ যুগ ধরে তারই পথচেয়ে অপেক্ষা করব। একজন সতীনারী কেবল একজনকেই স্বামী হিসেবে মনে জায়গা দিতে পারেন।''
ওই নববধূর অভিভাবক মো. আবদুল খালেক জানান, ''ছেলেটি ও তার পরিবারের লোকজন আমাদের সঙ্গে যা করল তা ভাষাহীন। একটি মেয়ের সঙ্গে এমন বিশ্বাসঘা'তকতা কীভাবে করতে পারে। এটা খুবই দুঃখজনক। আল্লাহ ঠিকই ওদের বিচার করবেন।''