নিউজ ডেস্ক : মায়ের করা মিথ্যা মামলায় কারাগারে দিন কাটছে বাবার। পথে পথে ঘুরছে ৩ শিশু। বাধ্য হয়ে বৃদ্ধ দাদার হাত ধরে আদালতে হাজির শিশুরা। শুরু হয় ৩ শিশুর অন্য রকম আইনি লড়াই। তিন শিশু আর একজন বৃদ্ধ। প্রিয়জনকে ফিরে পাওয়ার প্রতিজ্ঞা তাদের এক কাতারে এনে দাঁড় করিয়েছে।
১২ বছরের মিম, তার ছোট দুই ভাই সোহাগ আর সোহান আদালতে পা রেখেছে তাদের বাবাকে কারাকুঠুরি থেকে মুক্তি দিতে। এ যাত্রায় তাদের সহযাত্রী ৮০ বছরের বৃদ্ধ দাদা মোহাম্মদ আলী।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে শিশুদের দাদা বলেন, ওই দুজন মাদ্রাসায় পড়তেছে। ওদের খরচ আমি চালাতে পারছি না। এখন কোন উপায় না পেয়ে আমার ছেলের মুক্তির জন্য দুই নাতিকে নিয়ে আদালতে বারান্দায় ঘুরে ফিরি।
জানা গেছে, পরকীয়ার জের ধরে স্ত্রী আছমা বেগমের করা মিথ্যা মামলায় মো. সোহেল গেল দেড় বছর ধরে কারাগারে। এ মামলায় ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল মেয়ে মিমকে। কিন্তু এবার মিম আর তার ছোট দুভাই বাবার নির্দোষিতার কথা জানাতেই আদালতে হাজির হলো।
মেয়ে মিম জানান, আমার বাবাকে ছাড়া ভালো লাগছে না। মাঝে মাঝে মনে হয়, বাবাকে ছাড়া আমরা এতিম, আমাদের পৃথিবীতে কেউ নাই।
ছেলে সোহাগ জানান, আমি বাবাকে চাই, আর কিছু চাই না।
আসামিপক্ষের আইনজীবী মানঞ্জুরুল ইসলাম সুমন জানান, মায়ের পরকীয়া আসক্তি ধামাচাপা দেওয়া জন্য এই মামলাটি করা হয়েছে। আমরা এর ন্যায়বিচার আশা করছি। আর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী শহিদ হোসেন ঢালী জানান, মামলাটি মিথ্যা হলে বাদীর বিরুদ্ধে ১৭ ধারায় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
যদিও এরপরপরই সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের বিচারকের সঙ্গে যোগাযোগ করে আদালতের নির্ধারিত সময়ের বাইরে গিয়ে আসামি সোহেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের উদ্যোগ নেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী। এদিকে সোহেলের ৩ সন্তান আর বৃদ্ধ পিতার চোখে হার না মানার প্রত্যয়। আইনি লড়াইয়ে জয়ী হয়ে প্রিয়জনকে ঘরে ফিরিয়ে নেয়ার স্বপ্ন দেখছে তারা।