আরিফুল ইসলাম আরিফ, জাবি প্রতিনিধি: বাংলাদেশের একমাত্র আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। দেশের একমাত্র আবাসিক এই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ছাত্রলীগের উৎপাত দিনদিন বেড়েই চলছে। নানা রকম সন্ত্রাসমূলক কাজ, বিনা কারণে ছাত্রদলের কর্মীকে মারধর, সাধারণ শিক্ষার্থীকে মারধর ইত্যাদি ছাত্রলীগ কর্মীদের নিত্যদিনের কাজ হয়ে দাড়িয়েছে। গত এক মাসে পার্শ্ববর্তী এলাকা গেরুয়া বাজারে ভাংচুর, বিশ সাধারণ শিক্ষার্থীকে মারধর, ছাত্রদলের নেতাকে মারধর, মুক্তমঞ্চের অনুষ্ঠানে হাতাহাতি সহ নানরকম অপ্রীতিকর কর্মকান্ড করছে জাবি শাখা ছাত্রলীগরে নেতা-কর্মীরা।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে, বিগত এক মাস ধরে জাবি শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এধরনের বিতর্কিত কর্মকান্ড করছে। ১৪ই এপ্রিল রাতে মীর মশাররফ হোসেন হলে মাতাল অবস্থায় তিন নবীন শিক্ষার্থীকে মারধর করেছে ঐ হলের ছাত্রলীগের জুনিয়র কর্মীরা।
১৩ই এপ্রিল শহীদ সালাম বরকত হলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে ওয়েলকাম পরিবহনের একটি গাড়ি ভাঙচুর করে। একই সাথে বিভিন্ন সময় গাড়ির মালিকদের কাছ থেকে চাঁদা নেওয়ার অভিযোগতো রয়েছে। অনেক সময় চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে বিনা কারণে বিভিন্ন পরিবহনের গাড়ি ক্যাম্পাসের সামনে থামিয়ে ভাঙচুর কওে ছাত্রলীগ কর্মীরা। ১১ই এপ্রিল ছাত্রদলের সহ-সভাপতি বিপ্লবকে মেরে হাত-পা ভেঙে দেয় জাবি শাখা মওলানা ভাসানী হলের ছাত্রলীগের কর্মীরা।
এছাড়াও গত ২৬ শে মার্চ শহীদ রফিক-জব্বার হলের এক ছাত্রলীগের নেতার সাথে অসৌজন্যমূলক আচারণ করায় গেরুয়া বাজারের ৫ টি দোকানে হামলা ও ভাঙচুর চালায় ঐ হলের নেতাকর্মীরা। এদিকে ২৬ শে মার্চ ছাত্রলীগের শোডাউনে না যাওয়ায় ২০ সাধারণ শিক্ষার্থীকে মারধর করে আল-বেরুনী সম্প্রসারিত হলের নেতা-কর্মীরা। ১২ই মার্চ সাভার থেকে ক্যাম্পাসে আসার সময় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পদক রাজিব আহমেদ রাসেলের গায়ে ভিলেজ লাইন পরিবহনের ধাক্কা লাগার কারণে চারটি গাড়ি ভাঙচুর করে রাসেলের অনুসারীরা। এর আগে ৩রা মার্চ পরিসংখ্যন বিভাগের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মুক্তমঞ্চে শহীদ রফিক-জব্বার হলের ছাত্রলীগের কর্মীদের দ্বারা লাঞ্চিত হয় আল-বেরুনী সম্প্রসারিত হলের এক শিক্ষার্থী।
এসকল বিতর্কিত কর্মকান্ড সম্পর্কে জাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-সভাপতি রাজিব আহমেদ রাসেলের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “বৃহৎ ছাত্র সংগঠন হিসাবে জুনিয়র কর্মীরা বিভিন্ন সময়ে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়েছে। তবে এসকল অভিযোগের ভিত্তিতে যারা প্রকৃত দোষী তাদেরকে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ বিষয়ে জাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-সভাপতি মাহমুদুর রহমান জনি বলেন, “এ ধরনের কর্মকান্ড ছাত্রলীগের জন্য কলঙ্ক। ছাত্রলীগকে বিতর্কিত করতে বর্তমান সময়ে ছাত্রলীগের মধ্যে কিছু অপশক্তি প্রবেশ করে এ ধরনের কর্মকান্ড করছে। তবে খুব শিঘ্রই জাবি শাখা ছাত্রলীগ এসকল কীটকে খুজে বের করে শাস্তির ব্যবস্থা করবে।”
১৮ এপ্রিল, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এইচএস/কেএস