দিনাজপুর : বৃষ্টির আশায় ব্যাপক আয়োজনে ধুমধাম করে ব্যাঙের বিয়ে দেয়া হয়েছে। বিয়েতে গ্রামবাসীসহ প্রায় ৫শ' আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। রং মেখে ও নেচে-গেয়ে ব্যাঙের বিয়ে দেয়া হয়। এমন বিয়ের আয়োজন করে দিনাজপুরের বিরল উপজেলার ভারাডাঙ্গী বেতুড়া পশ্চিমপাড়া গ্রামের মানুষ।
শনিবার সকাল থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে এ বিয়ের অনুষ্ঠান। তাদের বিশ্বাস- ব্যাঙের বিয়ে দিলেই বৃষ্টি হবে। হিন্দু-মুসলিম সবাই মিলে এ আয়োজন করলেও বিয়েতে পালন করা হয় হিন্দু সম্প্রদায়ের বিয়ের রীতি।
আয়োজকরা জানান, আজ ভাদ্র মাসের পঞ্চম দিন। কিন্তু বৃষ্টি নেই। শুকিয়ে গেছে জমি। চারা রোপণ করা জমিগুলো পানির অভাবে চৌচির হয়ে গেছে। অনেকে শ্যালো মেশিন দিয়ে ক্ষেতে পানি দিচ্ছে। বৃষ্টির আশায় ব্যাঙের বিয়ের আয়োজন করা হয়।
বৃষ্টির আশায় ব্যাঙের বিয়ের আয়োজন চলছিল সাতদিন আগে থেকে। গ্রামের যুবকরা সাতদিন আগে থেকে গ্রামের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নেচে-গেয়ে অর্থ, চাল, মরিচ, পেঁয়াজ, রসুন, আদা, তেল ইত্যাদি সংগ্রহ করে। এসময় প্রতিটি বাড়িতে ব্যাঙের বিয়ে খেতে আসার দাওয়াতও দেয়া হয়।
শনিবার সকাল থেকে শুরু হয় ব্যাঙের বিয়ে। কলার গাছ ও ফুল দিয়ে সাজানো মাড়োয়ায় গ্রামবাসী আসতে শুরু করে। বাজানো হয় মাইক। রং মেখে, কাঁদা মেখে শুরু হয় নাচ-গান।
বেলা সাড়ে ১২টার দিকে হৃদয়ের মা ডাবু বালা ও স্বপ্নার শেফালী রানী রায় বর ও কনেকে নিয়ে হাজির হয় মাড়োয়ায়। পাশেই চলছিল রান্না-বান্নার কাজ। শুরু হয় নাচ-গান। গ্রামের মানুষ বর-কনেকে দেখে টাকাসহ বিভিন্ন প্রকার উপহার দিয়ে খিচুড়ি খেয়ে যায়।
মাড়োয়ার আশপাশে চলে লাঙল দিয়ে জমি চাষ। শুকনার মধ্যে লাগানো হয় ধানের চারা। যেন অন্যরকম এক উৎসব। উৎসবে মুসলমান-হিন্দু সম্প্রদায়ের সব বয়সের মানুষের আগমনে মিলন মেলায় পরিণত হয়।
বিরল ভান্ডারা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মহেশ চন্দ্র রায় জানান, সাতদিন ধরে এ আয়োজন চলছে। এলাকার যুবারা এ আয়োজন করেছে। কনেকে শ্বশুরবাড়িতে আনতে বিকেলে গরুর গাড়িতে করে কনের বাড়িতে যাওয়া হবে।
২০আগস্ট, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম