দিনাজপুর : নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী তার নির্বাচনী এলাকায় গণ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেয়ার সময় প্রয়াত পিতার কথা স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আবেক আপ্লুত হয়ে নিজে কাঁদলেন এবং উপস্থিত সবাইকে কাঁদালেন। সবাই কিংকর্তব্যবিমূঢ়। গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠান যেন শোকে পরিণত!
বৃহস্পতিবার দিনাজপুরের সেতাবগঞ্জ বড় মাঠে বোচাগঞ্জ উপজেল আওয়ামীলীগ আয়োজিত গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী কেঁদে ফেলেন। এ সময় প্রায় দুই মিনিট উপস্থিত সবাই কেঁদে পেলেন।
এর পর তিনি মন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী তার আবেক আপ্লুত কণ্ঠে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, আপনারা আমার পিতা প্রয়াত মন্ত্রী আব্দুর রৌফ চৌধুরী ও আমাকে যে সম্মান দিয়েছেন, ভালোবাসা দিয়েছেন, সেই ঋণ আমি কিভাবে পরিষদ করব তা জানি না। তবে এতটুকু বলতে পারব আমি অন্যায়ের সঙ্গে কোনো দিন আপোষ করিনি। কারো প্রতি অন্যায় করিনি। কারো মঙ্গল চাড়া অমঙ্গলের কথা চিন্তা করিনি। মুক্তিযোদ্ধকে সব সময় লালন করেছি, বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করেছি। শেখ হাসিনার নেতৃত্ব থেকে বিচ্যুত হইনি। আমি আপনাদের সন্তান, আপনাদের ভাই, আপনাদের বন্ধু, আমি আপনাদের সঙ্গে সে ভাবেই থাকতে চাই। আপনারা বোচাগঞ্জ বিরলের মানুষ আমাকে যে সহায়তা ও সমর্থন দিয়েছেন আমি যেন কখনো তার অমর্যাদা না করি।
আজকের এই দিনে বার বার মনে পড়ছে আমার পিতা প্রয়াতমন্ত্রী বলেই আবেক আপ্লুত হয়ে কেঁদে ফেলেন।
প্রায় দুই মিনিট পর তিনি নিজেকে স্বাভাবিক করে আবারো কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার পিতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে আপনাদেরকে ভালোবেসে বার বার নির্যাতিত হয়েছেন নিপীড়িত হয়েছেন। তার পরেও কখনো সততার প্রশ্নে আদর্শের প্রশ্নে আপোষ করেন নাই। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য তার শরীরের রক্ত পর্যন্ত ঝড়িয়েছেন। কোনোদিন বঙ্গবন্ধুর প্রশ্নে ও শেখ হাসিনার প্রশ্নে আপোষ করেন নাই।
তিনি বলেন, আপনারা আমার প্রতি দোয়া ও আশীর্বাদ করবেন বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার আদর্শ থেকে পথচলা যেন বিচ্যুত না হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই দেশকে ভালোবেসে দেশের মানুষকে মুক্ত করার জন্য ২৩ বছর লড়াই সংগ্রাম করেছেন। ১৪ বছর তিনি কারা বরণ করেছেন। বঙ্গবন্ধুর প্রতি বাংলার মানুষ বিশ্বাস রেখেছিল বলেই মহান মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লক্ষ মানুষ জীবণ দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার জন্য দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছিলেন। মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় তাঁকেসহ পরিবারের সকল সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে শুধু এইদেশকে সোনার বাংলার গড়ার পথ করে দিয়েছিলেন এই অপরাধে। জাতি হিসাবে, নাগরিক হিসাবে এই ঋণ আমাদেরকে শোধ করতে হবে ৩০ লক্ষ শহীদের সোনার বাংলা বিনির্মাণ করে।
বোচাগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবু সৈয়দ হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুল ইমাম চৌধুরী, , জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, যুগ্ম সম্পাদক ফারুকুজ্জামান চৌধুরী মাইকেল, বোচাগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আফছার আলী, সেতাবগঞ্জ পৌর মেয়র আব্দুস সবুর, বিরল উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল লতিফ, সাধারণ সম্পাদক এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান বাবু। উপস্থিত ছিলেন জেলা উপজেলার বিভিন্ন স্তরের আওয়ামীলীগের নেতাকর্মী, ইউপি চেয়ারম্যানগণ, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্তসহ সর্বস্তরের মানুষ। এ সময় তারা মন্ত্রীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।