মঙ্গলবার, ০৯ আগস্ট, ২০১৬, ০২:৩০:১৬

কোন দেশের মানুষ সবচেয়ে বেশি ভূত-বিশ্বাসী?

কোন দেশের মানুষ সবচেয়ে বেশি ভূত-বিশ্বাসী?

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : ছোটবেলা থেকে আপনি নির্ঘাৎ জেনে এসেছেন, ভারতবর্ষ এক আপাদমস্তক কুসংস্কারের দেশ। এদেশের মানুষই ভূত-প্রেত-দত্যি-দানোয় সব থেকে বেশি সংখ্যায় বিশ্বাসী। কিন্তু বাস্তবের ছবিটা একেবারেই আলাদা। যে পশ্চিম ভারতের নামে এই ‘অকথা’-টি যুগ যুগ ধরে বলে এসেছে, প্রচার করেছে, সেই পশ্চিমের প্রধান দুই মুলুকেই ভূত-বিশ্বাসীর সংখ্যা শুনলে মাথা ঘুরে যেতে পারে।

২০০৭-এর এক সমীক্ষা থেকে জানা যাচ্ছে, ব্রিটেনের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬৮ শতাংশ মানুষ প্রেতাত্মায় বিশ্বাস রাখেন। মজার ব্যাপার, এর মধ্যে ৫৫ শতাংশ জানিয়েছেন, তাঁরা ঈশ্বরবিশ্বাসী। খোদ বিলেতে যদি ভগবানের থেকে যদি ভূত জনপ্রিয় হয়ে থাকেন, তাহলে প্রশ্ন জাগতেই পারে, ভারত কী দোষ করল।

একই বছর মার্কিন মুলুকে গৃহিত একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, সে দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩৪ শতাংশ মানুষের মন ঘোরতর ভূত-বিশ্বাস। তার মধ্যে আবার ২৩ শতাংশ মানুষ দাবি করেছেন, তারা রীতিমতো ভূত দেখেছেন অথবা ভৌতিক অস্তিত্ব অনুভব করেছেন।

ঠিক কেন এই ভূত-বিশ্বাস? সমাজ-মনস্তাত্ত্বিকদের মত, দুই দেশে দু’প্রকার কারণ কাজ করেছে এ ধরনের গণবিশ্বাসের পিছনে। ব্রিটেনের স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়া, বৃষ্টি-প্রাধান্য ভৌতিক গল্পের সংক্রমণের পক্ষে উপযুক্ত। তার উপরে বিপুল সংখ্যক পুরনো প্রাসাদ, কবরখানা, মান্ধাতার আমলের গির্জা, তার ভল্ট, মাটির নীচের অলিগলি অবশ্যই একধরনের ছমছমে বাতাবরণকে বজায় রাখে, যাতে ভূতে বিশ্বাস হওয়াটাই স্বাভাবিক। সেই সঙ্গে অবশ্যই রয়েছে ব্রিটিশ সাহিত্যিকদের অনবদ্য কলমের অবদান। বিদেহী আত্মা নিয়ে চর্চাও ব্রিটেন কম করেনি। প্ল্যানচেট, সিঁয়াস, গুপ্তচক্র বিভিন্ন কালে সেদেশে ফিরে ফিরে এসেছে। এমন পরিবেশে ভুতে বিশ্বাস না রাখাটাই আশ্চর্যের।

কিন্তু এমন পরিবেশ ও ইতিহাস মার্কিন দেশের নয়। সেই বিপুল দেশে কেন এহেন ভৌতিকতা? এখানে মনোবিদদের বক্তব্য— আমেরিকার কোনও কোনও জায়গা সরাসরি ব্রিটেনের অনুরূপ। তেমনভাবেই এদের তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু সেটা বড় কথা নয়। আদি বাসিন্দা আমেরিন্ডদের হঠিয়ে দেশ দখল, স্বাধীনতা যুদ্ধ, গৃহযুদ্ধ ইত্যাদি কারণে বার বার এই দেশকে দেখেতে হয়েছে অসংখ্য মৃত্যু। ফাঁকা প্রান্তর, জনহীন সড়ক, পরিত্যক্ত শহর ইত্যাদি সেখানে নিয়ে এসেছে গা-শিরশির করে তোলা আবহাওয়া। তার পরে সেখানেও আবির্ভাব ঘটে এডগার এলান পো বা এইচ পি লাভক্র্যাফ্‌টের মতো প্রতিভাবান হরর সাহিত্যিকের। আর সব থেকে বড় কথা গণবিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে হলিউড তৈরি করে ‘হরর ইন্ডাস্ট্রি’। আবার হরর ইন্ডাস্ট্রি রিসাইক‌্‌লড হয় গণবিশ্বাসে।

ফলে ভূতেদের স্থান এই দুই দেশে পাকাপোক্ত। - এবেলা

৯ আগস্ট ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস‌‌‌‌

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে