বৃহস্পতিবার, ১১ আগস্ট, ২০১৬, ১১:১৫:১৫

যেসব স্থানে ছড়িয়ে রয়েছে হিটলারের গুপ্তধন!

যেসব স্থানে ছড়িয়ে রয়েছে হিটলারের গুপ্তধন!

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : সম্প্রতি মিশরের তাবা এলাকায় লুকিয়ে রাখা নাৎসি ল্যান্ডমাইনগুলিকে খুঁজে বার করে নাশকতার কাজে ব্যবহার করছে আইএস জঙ্গিরা, খবরে জানা যায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ বাধার আগে নাকি এই মাইনগুলিকে জার্মান সেনারা পুঁতে রেখেছিল মিশরের বিভিন্ন এলাকায়। এই মাইনগুলোর খোঁজ পাওয়া আইসিস-এর কাছে গুপ্তধন পাওয়ার সামিল। এই মাইনগুলির ইতিহাস ও পরিণতি যা-ই হোক না কেন, এদের সঙ্গে নাৎসি গুপ্তধনের ইতিহাস শেষ হয়ে যাচ্ছে না। বরং ১৯৪৫ সালের পর থেকে ক্রমাগত পল্লবিত হতে থাকা নাৎসি গুপ্তধন-কিংবদন্তিকেই মদত করছে এই ঘটনা।  

স্টিভেন স্পিলবার্গ পরিচালিত ইন্ডিয়ানা জোনস সিরিজের মূল উপজীব্যই হলো হিটলারের গুপ্তধন। জর্জ লুকাচ যখন এই অভিযাত্রী চরিত্রটি তৈরি করেন, তখন তার মাথায় ছিল ইউরোপে কয়েক প্রজন্ম ধরে চলে আসা ‘নাৎসি ট্রেজার’-এর কাহিনি। কোনো না কোনো সূত্র থেকে ইউরোপের এক বিপুল অংশের মানুষ আজো বিশ্বাস করেন, নাৎসি নেতা হিটলার এবং তার বাহিনীর হোমরা-চোমরারা বিপুল পরিমাণ ধনসম্পদের অধিকারী হয়েছিলেন। বিশ্বযুদ্ধের সময় এই সম্পদ তারা লুকিয়ে ফেলেন।

যুদ্ধে পরাজয়ের পরে এই গুপ্তধন আর উদ্ধার করা যায়নি। বিপুল সংখ্যক ‘ট্রেজার হান্টার’ আজো সন্ধান করেন এই গুপ্তধনের। পাওয়া গেল কি গেল না, সেটা বড় কথা নয়। সন্ধানের সুখে মেতে রয়েছেন এই সব প্রত্ন-সন্ধানীরা। একনজরে দেখে নেয়া যেতে পারে, হিটলার তথা নাৎসিদের তথাকথিত গুপ্তধন-তালিকা।

• গুপ্তধন সন্ধানীদের হিসেব অনুযায়ী কেবল মাত্র জার্মানির চৌহদ্দিতেই নাকি ৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থমূল্যের নাৎসি-সম্পদ ছড়িয়ে রয়েছে।

• এই সম্পদের মধ্যে সোনা-রুপো ছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন শিল্পবস্তু, ইহুদিদের কাছ থেকে নাকি এগুলো হিটলার আত্মসাৎ করেছিলেন। যুদ্ধের পরে মিত্রশক্তি বেশ খানিকটা সম্পদ উদ্ধার করলেও এর একটা বড় অংশ উদ্ধার করা যায়নি।

• ২০১৫-এ পোল্যান্ডের ওয়ালব্র্‌জিক শহরের বাসিন্দারা দাবি করেন, এই শহরের নিকটবর্তী গোপন রেলওয়ে টানেলের ভিতরে তারা এমন এক ট্রেনের সন্ধান পেয়েছেন, যা নাৎসি নেতারা লুকিয়ে রেখেছিলেন পাহড়গর্ভের গোলকধাঁধায়। এই ট্রেন নাকি ভর্তি ছিল সোনা-দানায়।

• ২০১২ সালে মিউনিখের একটি ফ্ল্যাট থেকে ১.৮ বিলিয়ন ডলার অর্থমূল্যের শিল্পবস্তু পাওয়া যায়, যা নাকি নাৎসিরাই লুকিয়ে রেখেছিল।

• গুপ্তধন সন্ধানীদের বিশ্বাস, হিটালার অধিকৃত ইউরোপের কয়েকটি হ্রদে নাকি লুকনো রয়েছে নাৎসি সম্পদ।

অস্ট্রিয়ার লেক টপলিৎজ

• হিটলারের অন্যতম সহচর হেইনরিখ হিমলার ওয়ওয়েলসবার্গের পার্বত্য অঞ্চলে যুদ্ধের আগে একটি দুর্গ কেনেন। হিটলারের শাসনের পতন নিশ্চিত হয়ে উঠলে এই দুর্গ হিমলার ত্যাগ করেন। এই দুর্গে নাৎসি গুপ্তধনের সন্ধানে প্রায়ই হানা দেন ট্রেজার হান্টাররা।

• মধ্য জার্মানির জোনাস উপত্যকায় এমন কিছু জিনিস নাকি হিটলার লুকিয়ে রেখেছিলেন, যা কল্পনাতে আনাও দুষ্কর। গুপ্তধন সন্ধানীদের একাংশ মনে করেন, হিটলারের হাতে আণবিক বোমা মজুদ ছিল। আরও গুজব— নাসিদের হাতে নাকি উড়ন্ত চাকির মতো কিছু অস্ত্র এসেছিল। সেই অস্ত্রের ভাঁড়ারটাও নাকি এই প্রাসাদে রয়ে গিয়েছে।

• এর বাইরে, জার্মানির আলপান অঞ্চলের লেক ওয়ালখেন, লেক লুয়েনারে প্রচুর পরিমাণে নাৎসি সোনা লুকনো রয়েছে বলে বিশ্বাস করেন অনেকেই।  

• ২০০১ সালে দক্ষিণ জার্মানির চিয়েনিস হ্রদ থেকে ৫৬ লক্ষ ডলার অর্থমূল্যের সোনার পাত্র উদ্ধার করা হয়। আজও অনেকে বিশ্বাস করেন, সেই হ্রদে বৃহত্তর কিছু রয়েছে।

• অস্ট্রিয়ার লেক টপলিৎজ-এ প্রায়শই হানা দেন প্রত্ন-সন্ধানীরা। তাঁদের বিশ্বাস, এই হ্রদে বিপুল পরিমাণ সম্পদ রেখে গিয়েছেন নাৎসী অফিসাররা।

• বার্লিন নগরীর উত্তরাংশে কোথাও নাৎসিরা খ্রিস্টিয় জগতের সবথেকে আলোচিত বস্তুটিকে লুকিয়ে রেখেছে বলে অনেকে বিশ্বাস করেন। তাঁদের মতে, বস্তুটি হল ‘হোলি গ্রেল’ অর্থাৎ কিনা, শেষ নৈশভোজে যিশুর ব্যবহৃত পানপাত্র, যে থেকে জল পান করলে অমরত্ব লাভ হয়। বলাই বাহুল্য, এই বস্তুরও কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি।-এবেলা
১১ আগস্ট, ২০১৬ এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে