শুক্রবার, ১২ আগস্ট, ২০১৬, ০৫:২৮:২০

চিকিত্‍সায় নয়া দিগন্ত, ইচ্ছাশক্তি কাজে লাগিয়ে হাঁটলেন পক্ষাঘাতগ্রস্ত ৮ রোগী

চিকিত্‍সায় নয়া দিগন্ত, ইচ্ছাশক্তি কাজে লাগিয়ে হাঁটলেন পক্ষাঘাতগ্রস্ত ৮ রোগী

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : মেরুদণ্ডে একাধিক আঘাত পাওয়ার পরে পক্ষাঘাতে অচল হয়েছিল শরীর। চিকিত্‍সাবিজ্ঞানের সাহায্যে আবার হাত-পা নাড়াতে সক্ষম হলেন আট জন রোগী।

চলচল করতে অক্ষম এমন ব্যক্তিদেরকে বিজ্ঞানের সাহায্যে ফের সচল করতে সক্ষম হয়েছেন চিকিত্‍সাবিজ্ঞানীরা। তাদের প্রচেষ্টায় ব্রাজিলের সাও পাওলোয় শুরু হয়েছে 'ওয়াক এগেইন' প্রকল্প। জানা গিয়েছে, এর ফলে কৃত্রিম উপায়ে হাঁটা-চলার শক্তি ফিরে পাচ্ছেন অনেকেই।

কৃত্রিম উপায়ে অচল অঙ্গে সাড় ফেরাতে এক্সোস্কেলিটন ব্যবহার শুরু হয়েছে বেশ কয়েক বছর। তবে সেই পদ্ধতির চেয়ে কিছু আলাদা 'ওয়াক এগেইন'। এক্ষেত্রে মস্তিষ্কের সঙ্গে যন্ত্রের সম্পর্ক স্থাপনে সফল হয়েছেন বিজ্ঞানীরা। উদ্দেশ্য, মগজের নির্দেশ মেনে হাত-পা নাড়াচাড়ায় সাহায্য করবে এক্সোস্কেলিটন।

সাও পাওলোর গবেষণাগারে ৮ জন রোগীর ওপর পরীক্ষা চালানোর পরে বিস্মিত হয়েছেন বিজ্ঞানীরা। দেখা গিয়েছে, মেরদণ্ডের জখমের নীচের অংশে তারা ফের সাড় ফিরে পেতে শুরু করেছেন। চিন্তাশক্তির সাহায্যে এক্সোস্কেলিটন নিয়ন্ত্রণ করে অসাড় অঙ্গ সঞ্চালন করতে সক্ষম হয়েছেন আট জনই।

এর আগে মনে করা হয়েছিল, আট জনের মেরুদণ্ড মারাত্মক রকম জখম হওয়ার কারণে তাদের সমস্ত স্নায়ু ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছে। পরীক্ষার সাফল্য দেখে গবেষকরা মনে করছেন, এক্সোস্কেলিটনের সাহায্যে প্রশিক্ষণে তাদের স্নায়ুতন্ত্রে ফের কাজ করতে আরম্ভ করেছে। তাদের বিশ্বাস, চোট পাওয়ার পরেও কয়েকটি স্নায়ু অক্ষত ছিল। যার সাহায্যে ওই ৮ রোগীর মস্তিষ্কের সার্কিট ফের সক্রিয় হয়েছে।

সায়েন্টিফিক রিপোর্টস জার্নালে গবেষকরা জানিয়েছেন, 'এক নম্বর রোগী কৃত্রিম সাহায্য নিয়েও দাঁড়াতে পারছিলেন না। ১০ মাসের প্রশিক্ষণ শেষ হলে তিনি ব্রেস ও ওয়াকারের সাহায্যে এক প্রশিক্ষকের সঙ্গে হাঁটতে পারছেন। বস্তুত, এক্সোস্কেলিটনের ওপর ভর করে শূন্যে হাঁটতে পারছেন এই রোগী। মোটের ওপর, নিজের চেষ্টায় হাঁটার ক্ষমতা তিনি আয়ত্ত করেছেন।'

আরেকটি জায়গায় লেখা হয়েছে, 'সাত নম্বর রোগী দু'টি ক্রাচ এবং লোয়ার লিম্ব অর্থোজ-এর সাহায্যে থেরাপিস্টের সাহায্য ছাড়াই হাঁটতে পারছেন।' আমেরিকার ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরো ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ডিরেক্টর ডক্টর মিগুয়েল নিকোলেসিস জানিয়েছেন, সাও পাওলোর প্রশিক্ষণ শিবিরে যাওয়ার আগে সাত জন রোগীকে সম্পূর্ণ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। এই মুহূর্তে তাদের আংশিক পক্ষাঘাতগ্রস্ত পর্যায়ভুক্ত করা গিয়েছে। তাদের শারীরিক অবস্থার আরো উন্নতি হবে বলে তিনি আশা করেন।

জানা গিয়েছে, প্রশিক্ষণ শিবিরে রোগীদের ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে মস্তিষ্ক-যন্ত্র ইন্টারফেস মারফত কম্পিউটার নিয়ন্ত্রণ করার তালিম দেয়া হয়েছে। এর ফলে যখনই তাদের হাঁটার ইচ্ছে জাগছে, এই প্রক্রিয়া কাজে লাগিয়ে তারা তা করতে সক্ষম হচ্ছেন। একই প্রযুক্তির সাহায্যে প্রথমে রোবট এবং পরে এক্সেস্কেলিটন নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হচ্ছেন এসব পক্ষাঘাতগ্রস্তরা।-টাইমস অফ ইন্ডিয়া
১১ আগস্ট, ২০১৬ এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে