রবিবার, ২১ আগস্ট, ২০১৬, ০১:৫০:৫৩

চায়ের দোকানের কাজের লোক থেকে শিল্পপতি!

চায়ের দোকানের কাজের লোক থেকে শিল্পপতি!

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক: মুম্বাই ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টের খুব কাছেই 'বম্বে টু বার্সেলোনা' নামে যে ক্যাফেটি চোখে পড়ে, তা আপাতভাবে আর পাঁচটি ক্যাফের মতো মনে হলেও আদতে এর পিছনে একটা অন্য গল্প আছে।

৩৬ বছর বয়সী আমিন শেইখ একজন ব্যবসায়ী। এই ক্যাফেটি তাঁরই। তবে তাঁর প্রথম জীবনটা খুব একটা সহজ ছিল না। ছোটবেলা কেটেছে খুব কষ্টের মধ্যে। সৎবাবার হাতে অত্যাচারিত হতে হয়েছে দিনের পর দিন।

শুধু তাই নয়, দিনের শেষে এক মুঠো খাবারের জন্য তাঁকে অনেকটা সময় একটি চায়ের দোকানে কাজ করতে হতো। একদিন খেলতে খেলতে একটি কাচের গ্লাস ভেঙে ফেলেন। তখনই তিনি বুঝতে পারেন যে তাঁর জন্য কী পাশবিক শাস্তি অপেক্ষা করছে। আর সেই ভয়েই বাধ্য হন বাড়ি থেকে পালাতে।

বাড়ি থেকে পালিয়ে এসে তাঁর স্থান হয় স্টেশনে। মাত্র ৫ বছর বয়সেই তাঁকে যা যা সহ্য করতে হয়েছিল তা কল্পনাও করা যায় না। ওই বয়সে সব শিশুরই অনেক আদরে বড় হওয়ার কথা।

কিছুদিন পরে ‘দাদার’ স্টেশন চত্বরেই আমিন খুঁজে পান তাঁর বোনকে। সেও অত্যাচারের হাত থেকে রেহাই পেতে বাড়ি থেকে পালিয়ে আসে। এর পরে শুরু হয় আমিনের জীবনের কঠিন লড়াই।

দুই ভাইবোনের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা খুবই কম ছিল। এমন অবস্থায় সিস্টার স্টিফেন তাঁদের উদ্ধার করেন এবং তাঁর স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় নিয়ে যান। এর পরে ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত আমিনের জীবন কেটে যায় ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায়।

সেখান থেকে বেরিয়ে প্রথমে বাড়ি বাড়ি সংবাদপত্র বিলি করার কাজ ও পরে নিজেই সংবাদপত্র বিলির এজেন্ট হিসেবে ব্যবসা শুরু করেন। পরবর্তীকালে ফাদার প্ল্যাসি তাঁকে একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে কাজ করার সুযোগ করে দেন।

সেই কোম্পানির মালিক ‘ইউস্টাস ফার্নান্ডেজ’ আমিনকে ভবিষ্যতে পথ চলার ক্ষেত্রে বহু পরামর্শ দেন। তাঁর কাছে থেকে আমিন ইংরেজি ভাষাও ভাল রপ্ত করে ফেলেন।

২০০২ সালে আমিন ওই ট্রাভেল এজেন্সির সঙ্গে বার্সেলোনা ট্রিপে যান। শহরটি তাঁর এতটাই পছন্দ হয়ে যায় যে তার পর থেকে প্রতি বছরই তিনিসেখানে বেড়াতে যান। এই বার্সেলোনাই আমিনের জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। ওই শহরে তিনি একটি জিনিস লক্ষ্য করেন— সেখানকার রাস্তায় কোনও পথশিশু নেই।

সেই থেকেই তাঁর মাথায় আসে যে ভারতে কেন এমন হতে পারে না! সেই ধারণা থেকেই ২০১০ সালে তিনি পথশিশুদের জন্য একটা ক্যাফে বানান, যার নাম দেন 'বম্বে টু বার্সেলোনা'। তিনি মনেপ্রাণে চান, তাঁর মতো যন্ত্রণাময় শৈশব যেন আর কোনও শিশুকেই কাটাতে না হয়।-এবেলা ম্যাচেয়ার
২১ আগস্ট,২০১৬/এমটি নিউজ২৪/আ শি/এএস

 

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে