এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : বর্তমানে প্রযুক্তির যুগে গোটা পৃথিবী যখন এগিয়ে চলছে তর তর কেরে ঠিক তখনো কিছু মানুষ বেঁচে আছেন অন্ধ কুসংস্কার এবং ধর্মান্ধতাকে আঁকড়ে ধরে। মধ্যপ্রাচ্য এবং উপমহাদেশের রক্ষণশীল সমাজে এই কুসংস্কারের প্রাদুর্ভাব বেশি। আর বলা বাহুল্য যে, এইসব কুসংস্কারের সবচেয়ে বড় এবং প্রধান শিকার নারীরা। নারীদের নানাভাবে বশে রাখতেই এইসব আজগুবি এবং মিথ্যা নিয়মকানুন তৈরি করেছে পুরুষরা। তারই জ্বলজ্যান্ত প্রমাণ ভারতের এই গ্রাম।
চিকিৎসার নামে কি না হয়- লোকমুখে প্রচলিত এই কথাটির যথার্থতা মেলে ভারতের দক্ষিণ রাজস্থানের ভিলওয়ারায়। সেখানে তিলকার গ্রামের বানকায়া মাতার মন্দিরে দেওয়া হয় নারীদের বিভিন্ন রোগমুক্তির ওষুধ।
এটুকু ঠিকই ছিল, কিন্তু বড় অদ্ভূত সেই ওষুধ! শুনলে আপনি নিজেও চমকে উঠবেন। আপনার মনে পড়ে যাবে ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায় ‘ডমরুচরিত’-এ বেচু কবিরাজের আশ্চর্য চিকিৎসার কথা। এখানে চিকিৎসার নামে নারীদের পুরুষের জুতায় করে পানি খাওয়ানো হয়।
ভারতের একটি অনলাইন মিডিয়া জানায়, প্রতি সপ্তাহে আশপাশের গ্রামগুলো থেকে একশর বেশি নারী এই বানকায়া মাতার মন্দিরে আসে। সর্বরোগের আরোগ্য হিসেবে পুরুষের জুতায় করে পানি খাওয়ানো হয় এসব নারীদের।
স্থানীয়দের বর্ণনা অনুযায়ী, ওই মন্দিরে চিকিৎসার জন্য কোনো নারী এলে প্রথমে তাকে মন্দিরের পুরোহিতের জুতা দিয়ে জলাশয়ে পাঠানো হয়। নারীরা দাঁতে কামড় দিয়ে ওই জুতা বহন করেন। এরপর মন্দির থেকে ২০০ ধাপ সিঁড়ি বেয়ে নিচের জলাশয়ে গিয়ে ওই জুতায় করে পানি পান করেন। এতে ওই নারীর শরীর থেকে যাবতীয় দুষ্ট আত্মার সঙ্গে রোগও বের হয়ে যায় বলে বিশ্বাস পুরোহিতদের।
১৯৯৫ সালে প্রত্যন্ত গ্রামের এই মন্দিরের ছবি প্রথম তুলেছিলেন রাজস্থানের খ্যাতনামা আলোকচিত্রী সুধীর কাসলিওয়াল। তিনি জানান, স্থানীয় লোকেদের অন্ধ বিশ্বাসের ওপর ভর করে এই বর্বর প্রথাটি ওখানে টিকে আছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এখনও এই একুশ শতকে এসেও এমন একটি প্রথা টিকে আছে কেমন করে?
সুধীর জানান, ‘২১ বছর আগে আমি হুমকির মুখে যে আলোকচিত্র ধারণ করেছিলাম, এতগুলো বছর পরেও সেখানে একই অবস্থা চলছে। তিনি জানান, এই বর্বর ‘ধর্মীয় আচার’ পালনকালে নারীদের শারীরিকভাবেও হেনস্তা করা হয়।’
২৪ আগস্ট, ২০১৬ এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই