এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : প্রতিদিন মাথার ঘাম পায়ে ফেলে অল্প অল্প করে টাকা জমিয়েছিলেন ভারতের আমেদাবাদের অটোচালক মণিলাল গোহিল। কন্যাদায়গ্রস্ত পিতার মাথায় একটা জিনিসই ঘুরত, নিজেরা কষ্ট করে চললেও যে করেই হোক ভালো ঘরে বিয়ে দিতে হবে একমাত্র মেয়ে মিত্তলকে।
তবে মেয়েকে একটি উপহার কিনে দেয়ার জন্য তার এত কষ্টের টাকা এক ধাক্কায় খরচ করে ফেললেন মণিলাল।
৫ লাখ টাকা দিয়ে মেয়েকে কিনে দিলেন জার্মানির তৈরি এক অত্যাধুনিক রাইফেল। নিজের স্বপ্নের থেকেও তখন তার কাছে অনেক দামি মেয়ের স্বপ্ন। গোটা বিশ্বের দরবারে শ্যুটিংয়ে দেশের নাম উজ্জ্বল করার স্বপ্ন।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতীয় লেভেলের শ্যুটার মিত্তলের জন্য রাইফেল কিনে যখন তার বাবা লাইসেন্স করাতে গেলেন, তখন পুলিশ কর্তারাও অবাক। একজন সাধারণ অটোচালক হয়ে দামি রাইফেল কিনতে পারেন তা তাদের ধারণাতেও আসেনি।
গোমতিপুরের বাসিন্দা মিত্তল জানালেন, 'বাবা ও পরিবার শুধুমাত্র আমার দামি স্বপ্নটাকে সত্যি করার জন্য প্রচুর ত্যাগ করেছে। এই রাইফেল পাওয়ার পর আমি এবার খুব খাটব আর আন্তর্জাতিক স্তরে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করার চেষ্টা করব।'
২০১৩ সালে অল ইন্ডিয়া ন্যাশনাল শ্যুটিং চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিয়ে ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন এই অটোচালকের কন্যা। তবে তারপর থেকে নিজের রাইফেল না থাকায় বড় কোনো ইভেন্টের জন্য প্রস্তুতি নিতে পারছিলেন না মিত্তল।
তার নতুন রাইফেলের ওজন ৮ কেজি। এক-একটি গুলির দাম ৩১ টাকা। কোনো টুর্নামেন্টে নামার জন্য আমেদাবাদের এ মেয়ের প্রয়োজন অন্তত ১০০০ রাউন্ড গুলি। এখন সেই বুলেট কেনার জন্য ফের শুরু হয়েছে মণিলালের পরিবারের সংগ্রাম।
সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়ার স্বপ্ন থাকলেও উচ্চতা কম হওয়ায় সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি তার। তাই আপাতত মিত্তলের ধ্যান- শ্যুটিংয়ের মাধ্যমেই দেশের নাম উজ্জ্বল করা।
২৬ আগস্ট, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম