শুক্রবার, ২৬ আগস্ট, ২০১৬, ০৯:০৩:৫৩

৪০০ বছরের অভিশাপ আজো তাড়া করে ফেরে সেই রাজপরিবারকে

৪০০ বছরের অভিশাপ আজো তাড়া করে ফেরে সেই রাজপরিবারকে

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : রাজকীয় জীবনের পুরোটাই যে সোনায় মোড়ানো নয়, তা কিন্তু ছোটবেলায় পড়া রূপকথারাও জানায়। সেখানেও লালকমল-নীলকমলকে বুদ্ধু-ভুতুম হয়ে থাকতে হয়, রাজকন্যেকে ঘুম পাড়িয়ে রাখে দুষ্টু ডাইনি। কিন্তু বাস্তবের রাজা-রানীর জীবনেও কি অভিশাপ কাজ করে? উত্তর খুঁজতে গেলে থমকে দাঁড়াতে হয় মহীশূরের রাজ পরিবারের কাহিনিতে।

মহীশূরের রাজ পরিবারের উৎস ভারতের বিজয়নগর রাজবংশে। শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঐতিহাসিক কাহিনি ‘তুঙ্গভদ্রার তীরে’-র পাঠক মাত্রেই জানেন বিজয়নগর গোড়া থেকেই ছিল এক রহস্যাবৃত রাজ্য। বিজয়নগরের প্রতিষ্ঠাতা হরিহর এবং বুক্ককে ঘিরে সেখানে প্রচলিত ছিল অসংখ্য রহস্যময় কিংবদন্তি। সে যাই হোক, সেই বংশের রহস্যের উত্তরাধিকার ক্রমশ অর্সায় মহীশূরের রাজবংশে।

মহীশূরের ওয়াদিয়ার রাজবংশের পুরনো ইতিহাস ঘাঁটতে বসলে ৪০০ বছর আগেকার এক ঘটনায় থমকে দাঁড়াতে হয়। ১৬১২ সালে মহীশূর বিজয়নগর রাজ্যেরই অংশ ছিল। তখন সেখানে রাজত্ব করতেন রাজা তিরুমালারাজা। এক অসুখে তিনি দুর্বল হয়ে পড়েন। প্রশাসনেও শৈথিল্য দেখা দেয়। সেই সুযোগে তার শত্রুরা তাকে হত্যা করে সিংহাসন দখলের পরিকল্পনা করে। বিজয়নগর বংশকে উচ্ছেদ করতে উদ্যোগ নেয় ওয়াদিয়াররা। তারা তিরুমালারাজাকে ও তার পুত্রদের হত্যা করে এবং তার পরিবার ও অনুগত সভাসদদের বন্দি করে। রানি আলামেলাম্মাও বন্দি হন।

একদিন প্রহরী বদলের সময়ে আলামেলাম্মা বন্দিদশা থেকে পালাবেন বলে ঠিক করেন। তার গয়নাগাঁটি এবং জরুরি দলিল-দস্তাবেজ তিনি সঙ্গে নেন। পালিয়ে গিয়ে তিনি নিকটববর্তী তালাকাডু নামের এক গ্রামে আশ্রয় নেন। বিধবা রানির পলায়নের খবর পেয়ে ওয়াদিয়ার রাজ তার সৈন্যেদের তার সন্ধানে প্রেরণ করেন। সৈন্যরা তাকে খুঁজে বের করে। তার গয়না এবং দলিলগুলি বাজেয়াপ্ত করতে চায়। আত্মমর্যাদা রক্ষার্থে রানি কাবেরী নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেন। সঙ্গে গয়না ও দলিলও নিয়ে যান।

আত্মহননের প্রাকমুহূর্তে রানি এক অভিশপা দিয়েছিলেন বলে জানা যায়। তিনি নাকি বলেছিলেন— ওয়াদিয়াররা নির্বংশ হবেন। তালাকাডু ঊষর ভূমিতে পরিণত হবে। রানির আত্মহনন ও অভিশাপের সংবাদে ওয়াদিয়াররা ভয় পেয়ে যায়। তারা মহীশূর প্রাসাদে আলামেলাম্মার এক মূর্তি প্রতিষ্ঠা করে। এবং অভিশাপ মোচনের জন্য নিয়মিত তার পুজো করতে থাকে। আজো সেই মূর্তি মহীশূর প্রসাদে দণ্ডায়মান। এবং আশ্চর্যের বিষয়, ওয়াদিয়ারদের বংশধারা মোটেই টিকে থাকেনি। প্রজন্মের পর প্রজন্ম দত্তক গ্রহণ করেই টিকিয়ে রাখা হয় রাজবংশকে।-এবেলা
২৬ আগস্ট, ২০১৬ এমটিনিউজ২৪/শান্ত/মো:শাই

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে