এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : ভেনিজুয়েলার পরিবেশবিদ এরিক কুইরোগার বয়স তখন মোটে পাঁচ বছর। মায়ের সঙ্গে ঘুরতে গিয়েছিলেন সেখানে। নিজের শহর ভালেরা থেকে প্রায় ৪০ মাইল দূরে, আন্দিজের কোলে, ক্যাটাটুম্বো।
আপাত নিরিবিলি সেই জায়গাটা মাঝেমধ্যেই তোলপাড় ফেলে দেয়। পিলে চমকানো মেঘগর্জনে বজ্রপাতে তটস্থ চারপাশ। মাঝে মাঝে ঝিলক হাসি দিয়ে যায় বিদ্যুত্। তারপর আবার ওলটপালট করা ঝড়।
আরো চার বছর বাদে এরিকের পরিবার যখন মারাকাইবো লেকের কাছাকাছি থাকতে শুরু করে, তখন 'ক্যাটাটুম্বো লাইটনিং' তার প্যাশন হয়ে ওঠে।
কারণ ওই লেকই ছিল এই ঝড়জলের উত্সমুখ। রোজ রাতে আগ্রহ ভরে অপেক্ষা থাকত। কখন ঝড় উঠবে, ক্যাটাটুম্বো ঝলক দেবে আকাশে...। পরে এক সাক্ষাত্কারে এরিক জানিয়েছিলেন, 'ওই নয়েই আমি বজ্রবিদ্যুতের প্রেমে পড়ে যাই।'
সেই কুইরোগার বড়বেলায় একজন পরিবেশবিদ। দু-দশকেরও বেশি সময় সিনেমাটিক এই প্রাকৃতিক ঘটনা নিয়ে গবেষণা চালিয়ে গেছেন। তার সৌজন্যেই ২০১৫-এ গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম উঠেছে 'ক্যাটাটুম্বো লাইটনিং'-এর।
এর আগে এ রেকর্ড কঙ্গোর কিফুকা শহরের দখলে ছিল। বছরে ৩৬৫ দিনের মধ্যে ৩০০ দিনই ঝড়-ব্রজপাতে সেই রেকর্ড ভেঙে দেয় ক্যাটাটুম্বো।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিজ্ঞানীদের ধারণা- ক্যাটাটুম্বো নদীর নাম থেকেই ব্রজপাতের এমন নাম হয়েছে। যে নদী গিয়ে মিশেছে আন্দিজের কাছে মারাকাইবো লেকে। স্থানীয় ভূসংস্থান এবং বায়ুর কারণেই প্রকৃতির নাকি এমন অদ্ভুত আচরণ।
ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ থেকে গরম বাতাস এসে উঠতে পারে না পাহাড় ঘেরা মারাকাইবো লেক পর্যন্ত। পাহাড়ে বাধা পায়।
আন্দিজের কোল থেকে ওঠা ঠাণ্ডা বাতাসের সংস্পর্শে এসে বিস্ফারিত হয় সেই ঊষ্ণ বাতাস। ক্রমশ ঘনীভূত হয়ে বিদ্যুত্পূর্ণ মেঘের সঞ্চার করে, যা থেকে প্রতি মিনিটে গড়ে ২৮বার বজ্রপাত হয়।
৩১ আগস্ট,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম