এক্সক্লুসিভ ডেস্ক: পৃথিবীটা কংক্রিট, কার্বন মনোক্সাইড, শপিংমল, নিয়ন আলো আর মানসিক দূষণে এখনও ছেয়ে যায়নি। হাল্কা কুয়াশামাখা শীত, কয়েক লক্ষ তারায় গিজগিজে আকাশ, সবুজ পাহাড়, বাগানে সুমিষ্ট ফল, রংবেরঙের নাম না জানা পাখি -- সবই রয়েছে। এই আপাদমস্তক তথাকথিত আধুনিক পৃথিবীতেই রয়েছে।
তেমনই একটুকরো ভূখণ্ডের হদিশ হল গিয়েথুর্ন নামে এই গ্রাম। পুরাণের তপোবন বলতে যা বোঝায়, তা সবই পাবেন হল্যান্ডের গিয়েথুর্ন গ্রামটিতে। সবচেয়ে আশ্চর্যের হল, ছবির মতো সাজানো এই গ্রামে রাস্তা নেই। বাসিন্দারা সবাই জলপথ ব্যবহার করেন। নৌকোয় করেই সকলের যাতায়াত।
নেদারল্যান্ডস-এর এই ছোট্ট গ্রামটি পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ। গ্রামটিতে জনসংখ্যা সাকুল্যে ২ হাজার ৬০০। অভিনবত্ব হল, এই গ্রামটি ঘুরে দেখতে হলে দরকার পড়বেই বোট। আসলে জলেই লেখা গোটা গ্রাম। রাস্তা বলতে ক্যানেল। সেখানে ভাসে রংবেরঙের বোট। কোনও পয়সা দিতে হবে না। আপনি যে কোনও একটি বোটে বসে পড়লেই হল। তারপর দাঁড় বেয়ে বেয়ে ঘুরে বেড়ান। কেউ বিরক্ত করবে না। ক্যানেলের ধারে ধারে ছোট ছোট কটেজ। গাছপালায় ঢাকা। প্রচুর পাখির ডাক। স্নিগ্ধ, শুদ্ধ বাতাস। প্রাণভরে নিন অক্সিজেন। মজার কথাটি হল, গিয়েথুর্নে পোস্টমাস্টার চিঠিও বিলি করেন নৌকো চেপে।
থাকার জায়গাও ওই কটেজই। যে কোনও কটেজ ভাড়া করতেই পারেন পর্যটক। খুব দামী নয়। তবে হ্যাঁ, রান্না হয়তো নিজেকেই সারতে হবে। হল্যান্ডের পর্যটন বিভাগের ওয়েবসাইট বলছে, 'এই গ্রামে সবচেয়ে জোরে যে শব্দগুলি আপনি শুনতে পাবেন, তা হল হাঁসের ডাক আর অন্যান্য পাখিদের কলকাকলি। আর কোনও শব্দ নেই।' গাড়ির হর্ন, মাইকের আওয়াজ, কারখানার সাইরেন -- কিচ্ছু না।
কী ভাবে যাবেন?
অ্যামস্টারডাম থেকেই গাড়ি পাওয়া যায় গিয়েথুর্ন গ্রামে যাওয়ার। তারপর সবই নৌকো। ভেনিসের জলবিলাস সম্পর্কে অল্পবিস্তর সকলেই জানি। গিয়েথুর্ন কিন্তু একেবারে অন্য স্বাদ। রেস্তো সঙ্গ দিলে চেখে দেখতে ক্ষতি কী? অসহ্য সুন্দর!
৪ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি