এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : নোবেলজয়ীদের নিয়ে বিতর্ক বেশ পুরোনো। নোবেল কমিটির ভেতরেও ভিন্ন মত রয়েছে। কিছু পুরস্কার দেওয়ার পর বিব্রতকর অবস্থা তৈরি হয়েছে তাদের মধ্যেও।
তার পরেও কেউ নোবেল পুরস্কার পেলেই সাধারণ মানুষ মনে করে, তিনি মানবজাতির কল্যাণের জন্য যুগান্তকারী কোনো অবদান রেখেছেন। এই ধারণা পুরোপুরি সঠিক নয়।
রাসায়নিক অস্ত্র বা ডিডিটির মতো ক্ষতিকর উপাদান তৈরির জন্যও বিজ্ঞানীদের নোবেল দেওয়া হয়েছে। এমন অনেক লেখক এই পুরস্কারটি পেয়েছেন, জনসাধারণ যাঁদের খুব একটা চেনে না।
আবার কখনো কোনো আবিষ্কারের কৃতিত্ব প্রথম যে বিজ্ঞানী দাবি করেছেন, তাঁকেই নোবেল দেওয়া হয়েছে। শান্তিতে নোবেলজয়ী কয়েকজন ব্যক্তির প্রকৃত ভূমিকা নিয়েও জনমনে বিভক্তি রয়েছে।
২০১৩ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কারটি পারমাণবিক অস্ত্র নিবারণ সংস্থাকে (ওপিসিডব্লিউ) দেওয়া হয়। তার পর অনেকেই বলছেন, ‘রাসায়নিক যুদ্ধবিগ্রহের জনক’ হিসেবে পরিচিত জার্মান বিজ্ঞানী ফ্রিৎজ হ্যাবার।
তাকে ১৯১৮ সালে রসায়নে নোবেল পাওয়ায় কমিটির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছিল। সেটা পুষিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যেই এত বছর পর ওপিসিডব্লিউকে বেছে নেওয়া হয়েছে।
অ্যামোনিয়া সংশ্লেষণ নিয়ে গবেষণাকাজের জন্য নোবেল পেয়েছিলেন হ্যাবার। খাদ্য উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় সার তৈরিতে ওই গবেষণা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু বিষাক্ত কয়েকটি গ্যাসও আবিষ্কার করেছেন হ্যাবার, যেগুলো প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ব্যবহার করা হয়েছিল।
বেলজিয়ামের ইপ্রার যুদ্ধে এসব গ্যাস প্রয়োগের তত্ত্বাবধানও করেন হ্যাবার। সুইডেনের রসায়নবিদ ইনগার ইংমানসন এএফপিকে বলেন, যুদ্ধে জার্মানির পরাজয়ের পর হ্যাবার ভাবেননি, নোবেল পাবেন। তিনি বরং সামরিক আদালতে বিচারের (কোর্ট মার্শাল) মুখোমুখি হওয়ার আশঙ্কা করেছিলেন।
ফরাসি রসায়নবিদ ভিক্তর গ্রিনিয়ারও বিষাক্ত গ্যাস তৈরি করেন এবং সেগুলো যুদ্ধে ব্যবহারের আগেই ১৯১২ সালে নোবেল পান। ১৯১৮ সালের ওই মনোনয়ন নিয়ে বিতর্কের পর নোবেল কমিটি বেশ সতর্ক হয়েছিল।
তবু ১৯৪৫ সালে হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা নিক্ষেপের মাত্র তিন মাস পর নিউক্লিয়ার ফিশন আবিষ্কারের জন্য রসায়নে নোবেল দেওয়া হয় আরেক জার্মান বিজ্ঞানী অটো হানকে।
১৯৩৩ সালে তাঁর একটি আবিষ্কার পারমাণবিক অস্ত্র তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। অবশ্য হান কোনো দিনই তাঁর আবিষ্কারটি সামরিক উদ্দেশ্যে প্রয়োগের জন্য কাজ করেননি। সূত্র: এএফপি
০৫ অক্টোবর ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএস