বুধবার, ১২ অক্টোবর, ২০১৬, ০৯:০৪:৫৬

বয়স মাত্র ২৩! আমেরিকানদের বোকা বানিয়ে একবছরে পকেটে ৫০০ কোটি

বয়স মাত্র ২৩! আমেরিকানদের বোকা বানিয়ে একবছরে পকেটে ৫০০ কোটি

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : পুলিশ জানতে পেরেছে, প্রত্যেকটি কল সেন্টার থেকে দৈনিক প্রায় দেড় কোটি টাকা আয় হতো। বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমেরিকায় ফোন করা হতো।

অর্থ, দামি গাড়ি, বিলাসবহুলজীবন যাপনের শখ। আর সেই লোভ থেকেই এক বছরে আমেরিকানদের বোকা বানিয়ে প্রায় পাঁচশো কোটি টাকার প্রতারণা করে ফেলেছে ২৩ বছর বয়সি এক ভারতীয় যুবক। শাহগার ঠক্কর ওরফে শ্যাগি নামে ওই ভারতীয় আপাতত পুলিশের খাতায় ফেরার। বলা হচ্ছে, এটাই এখনও পর্যন্ত এদেশে হওয়া সবথেকে বড় টেলি-প্রতারণা।

কিন্তু কীভাবে আমেরিকানদের বোকা বানাতো ঠক্কর? উদ্দেশ্যপূরণ করার জন্য মহারাষ্ট্রের ঠানেতে রীতিমতো তিনটি কল সেন্টার খুলে কর্মী নিয়োগ করেছিল এই যুবক। আমেরিকানদের ফোন করে নিজেদের সেদেশের আয়কর দফতরের প্রতিনিধি বলে পরিচয় দিত ঠক্করের কল সেন্টারের কর্মীরা। কর না মেটালে গ্রেফতার অথবা বাড়িতে হানা দেওয়ার হুমকি দেওয়া হতো। যাঁরা এই ফাঁদে পা দিতেন, তাঁদের থেকে টাকা নেওয়ার জন্য দরাদরি শুরু হত। দশ থেকে কুড়ি হাজার ডলার দাবি করলেও শেষ পর্যন্ত তিন থেকে পাঁচ হাজার ডলারে রফা হত। এর পরে প্রি-লোডেড ক্যাশ কার্ড থেকে টাকা মেটাতে হতো প্রতারিতদের।

তবে আমেরিকানদের বোকা বানানোর জন্য রীতিমতো প্রস্তুতি নিতে হতো। যে কর্মীদের নিয়োগ করা হত, আমেরিকানদের কায়দায় ইংরেজি উচ্চারণের জন্য তাদের ছ’মাস কঠোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হত। তার পরে ফোনে কথোপকথনের জন্য নির্দিষ্ট স্ক্রিপ্ট দেওয়া হতো কর্মীদের। পুলিশ জানতে পেরেছে, প্রত্যেকটি কল সেন্টার থেকে দৈনিক প্রায় দেড় কোটি টাকা আয় হতো। বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমেরিকায় ফোন করা হতো। ফলে, সেখানে যাঁরা ফোন পেতেন, তাঁরা ভাবতেন আমেরিকার মধ্যে থেকেই ফোন আসছে। আমেরিকায় থাকা সহযোগীদের থেকে মোটা টাকার বিনিময়ে সে দেশের নাগরিকদের মোবাইল নম্বর কিনত ঠক্করের কল সেন্টারগুলি। তার পরে হাওয়ালার মাধ্যমে টাকা এদেশে পাচার করা হতো।

কর্মীদের বেতন ছাড়াও উপরি অর্থ দেওয়া হতো। যে কর্মী যত বেশি টাকার প্রতারণা করতে পারবে, তার উপরি আয় তত বেশি। এক একজন কর্মী মাসে মাইনে ছাড়াও অতিরিক্ত এক লক্ষ টাকাও আয় করতেন। এক-একজন কর্মী দিনে গড়ে একশোটি করে ফোন করতেন। তার মধ্যে অন্তত ১০ থেকে ১৫টি ক্ষেত্রে মার্কিন শিকাররা ফাঁদে পা দিতেন। তাঁদের থেকেই নানা রকম হুমকি দিয়ে অর্থ আদায় করা হতো।

সব কিছু ভালই চলছিল। কিন্তু শ্যাগির উপরে ক্ষুব্ধ তার এক প্রাক্তন কর্মীর কাছ থেকে গোপন সূত্রে সম্প্রতি এই বেআইনি কারবারের খবর পেয়ে ওই কলসেন্টারগুলিতে হানা দেয় পুলিশ। তার পরেই গোটা ঘটনার কথা জানাজানি হয়। আপাতত চক্রের মূল পাণ্ডা শ্যাগি বা শাহগার ঠক্করের খোঁজ করছে পুলিশ! -এবেলা।
১২ অক্টোবর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে