এক্সক্লুসিভ ডেস্ক: প্রত্যেকেরই কৌতূহল, আকাশ থেকে এমন রঙিন বরফ পড়ল কী করে। বরফ পরীক্ষা করতে গিয়ে গ্রামবাসীদের মধ্যে অতি উৎসাহী কেউ কেউ একটু চেখেও দেখেন।
বৃহস্পতিবার সাতসকালে উত্তর চব্বিশ পরগনার শাসন থানার পাকদহ গ্রামে বড়সড় বরফের টুকরো নিয়ে রীতিমতো হইচই শুরু হয়। গ্রামের বাসিন্দা শাহজাহান আলির বাড়িতে এদিন সকালে আকাশ থেকে আচমকা একটি বরফের চাঁই এসে পড়ে। নীল রংয়ের সেই অদ্ভুত দর্শন বরফের ওজন প্রায় পাঁচ কেজি। খবর ছড়িয়ে পড়তেই শাহজাহান আলির বাড়িতে ভিড় করেন গ্রামের বাসিন্দারা। প্রত্যেকেরই কৌতূহল, আকাশ থেকে এমন রঙিন বরফ পড়ল কী করে। বরফ পরীক্ষা করতে গিয়ে গ্রামবাসীদের মধ্যে অতি উৎসাহী কেউ কেউ একটু চেখেও দেখেন। তাতেও রহস্যভেদ হয়নি। কিন্তু বরফের আড়ালে কি খেলেন তাঁরা?
বিশেষজ্ঞদের দাবি সত্যি হলে, বরফের আড়ালে আসলে মল-মূত্র লুকিয়ে ছিল! কীভাবে? বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন এটি আসলে ব্লু আইস। অর্থাৎ বিমানের শৌচাগার থেকে বরফাকৃত মল-মূত্র বিমান থেকে কোনওভাবে নীচে পড়ে গিয়েছিল। বিমান যখন অনেক উচ্চতায় মাঝ আকাশে থাকে, তখন মানুষের মলমূত্র এবং বিভিন্ন জীবাণুনাশক রাসায়নিক মিশে বরফের আকার নেয়। গত ১৭ ডিসেম্বর এমনই ঘটনা ঘটেছিল উত্তরপ্রদেশে। সেক্ষেত্রে, এর থেকেও বড় একটি বরফের গোলার ধাক্কায় উত্তরপ্রদেশের আমকোহ গ্রামে গুরুতর আহত হয়েছিলেন রাজরানি গৌড় নামের ৬০ বছরের এক মহিলা। কিছুদিন পরে তা সংবাদমাধ্যমেও উঠে এসেছিল।
এই রহস্যজনক বরফের গোলা কী ভাবে আসতে পারে? এ নিয়ে বিভিন্ন জল্পনাও চলে। তবে এর ব্যাখ্যায় সেই সময়ে কিন্তু উড়ন্ত প্লেনের দিকেই আঙুল তুলেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, সেই সময়ে আমকোহ গ্রামের উপর দিয়ে উড়ে যাওয়া কোনও বাণিজ্যিক বিমানের শৌচাগার থেকেই ওই বরফের গোলা পড়েছে। এই ধরনের বরফাকৃত মলমূত্রকে ‘ব্লু আইস’ বলা হয়।
উত্তরপ্রদেশের ঘটনাটিতেই ভারতে প্রথম কেউ ব্লু আইসের আঘাতে আহত হন। বিমান পরিবহণ আইন অনুযায়ী এই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারেন। বিমান মাঝ আকাশে থাকাকালীন ব্লু আইস মাটিতে ফেলার নিয়ম নেই। বিমানচালকদের হাতে সেরকম কোনও সুযোগও থাকে না। তা সত্ত্বেও কোনওভাবে লিক করে বিমান থেকে মাটিতে ব্লু আইস পড়ার ঘটনা অতীতেও ঘটেছে। ক্যালিফোর্নিয়া, লন্ডনের মতো শহরেও এমন ঘটনার নজির রয়েছে। সেই তালিকাতেই হয়তো যুক্ত হল এরাজ্যের শাসন। ব্লু আইস বিমান থেকে কোনওভাবে লিক করলে বিমানেরও ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। কারণ বিমান থেকে পড়ার সময়ে কোনওভাবে পিছনের দিকে থাকা ইঞ্জিনে এই ব্লু আইস ধাক্কা মারলে বিমানের ইঞ্জিন অকেজো পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে।
এদিন, নীল রংয়ের সেরকমই এক বরফের টুকরো পড়েছিল শাসনের এই গ্রামে। যার রহস্য উদ্ঘাটনে বরফের স্বাদ নিয়েছিলেন অসংখ্য গ্রামবাসী। এখন তাঁরা বুঝতে পারছেন বরফ ভেবে আসলে কী চেখে দেখলেন!-কলকাতা২৪
১৩ অক্টোবর,২০১৬/এমটি নিউজ২৪ ডটকম/এইচএস/কেএস