বুধবার, ০৭ অক্টোবর, ২০১৫, ১২:৩৮:৩৮

সেই মহাপ্রলয় ঘটেছিল ভারতীয় উপমহাদেশেও

সেই মহাপ্রলয় ঘটেছিল ভারতীয় উপমহাদেশেও

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : সে দিনের সেই মহাপ্রলয়ের ঘটনাটা ঘটেছিল এখনকার ভারতীয় ভূখণ্ডেই! আরও ঠিকঠাক বলতে হলে, এখন যাকে ‘দাক্ষিণাত্য’ বলি, সেই জায়গাতেই! ভারতের দক্ষিণভাগের অধিকাংশ অঞ্চল নিয়ে গড়ে ওঠা মহাউপদ্বীপীয় মালভূমিকে ‘দাক্ষিণাত্য’ বলা হতো। তিনটি পর্বতশ্রেণীর মধ্যভাগে স্থিত দাক্ষিণাত্যে ভারতের আটটি রাজ্য প্রসারিত ছিল।

যে মহাপ্রলয়ের গ্রাসে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল পৃথিবীর অন্তত ৭০ শতাংশ ডাইনোসর। শাকাহারী বা, ‘হার্বিভোরাস’ তো বটেই, এমনকী, লুপ্ত হয়ে গিয়েছিল ভয়ঙ্কর মাংসাশী বা ‘কার্নিভোরাস’ ডাইনোসররাও।

ছয় কোটি ষাট লক্ষ বছর আগেকার কথা। সেটা ছিল ‘ক্রেটাসিয়াস’ যুগ। সেই যুগ, যখন একের পর এক আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ থেকে বেরনো লাভাস্রোতে প্রায় প্রতি মুহূর্তেই ক্ষতবিক্ষত হচ্ছিল সাবেক ‘গন্ডোয়ানা ল্যান্ডে’র সেই অংশটি, এখন যাকে আমরা ভারতীয় ভূখণ্ড বলে চিনি-জানি। গড়ে উঠছিল সেই এলাকা, আমরা এখন যাকে ‘দাক্ষিণাত্য’ বলে জানি। তখনকার সেই ‘দাক্ষিণাত্যে’ অবশ্য জুড়ে ছিল এখনকার অস্ট্রেলিয়া মহাদেশও।

কোনও বিশাল ধূমকেতু বা বড় কোনও নক্ষত্র পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়ায় সেই সময় প্রচুর ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরিও জেগে উঠেছিল ওই ভারতীয় ভূখণ্ডে। আর তাদের জ্বালামুখ থেকে গলগল করে বেরিয়ে এসেছিল আরও বেশি গনগনে লাভাস্রোত। সেই গনগনে লাভাস্রোতেই কার্যত, ‘সলিলসমাধি’ ঘটেছিল এই বিশ্বের অন্তত ৭০ শতাংশ ডাইনোসরের। হয়েছিল ভয়ঙ্কর ভূমিকম্প। যার মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে, নয় থেকে এগারোর মধ্যে। তখনই জন্মেছিল এখনকার দাক্ষিণাত্য।

বার্কলেতে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ববিদ পল রেনের সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় এই তথ্য পাওয়া গিয়েছে। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে খ্যাতনামা বিজ্ঞান-জার্নাল ‘সায়েন্স’-এ। এত দিন বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল, সুবিশাল পাহাড়ের মতো কোনও মহাজাগতিক বস্তু আমাদের গ্রহের উপর প্রচন্ড জোরে আছড়ে পড়ায় ‘ক্রেটাসিয়াস’ যুগে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল সব কিছু। বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল ডাইনোসরের মতো অতিকায় প্রাণীও। আর, সেটি পড়েছিল মেক্সিকোর ইউকাতান পেনিনসুলায়। সেখানে এখনও একটি সুবিশাল ও সুগভীর গহ্বর রয়েছে। এত দিন বিজ্ঞানীদের অনুমান ছিল, অত বড় মহাজাগতিক বস্তু আছড়ে পড়ার ফলেই ওই গহ্বরের সৃষ্টি হয়েছিল।

ভূতত্ত্ববিদ রেনের গবেষাপত্রটি সেই ধারণার মর্মমূলেই ঘা দিল!
৭ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে