বৃহস্পতিবার, ২০ অক্টোবর, ২০১৬, ০৪:০৯:০৪

রাতারাতি জীবন পাল্টে গেল এই পাকিস্তানি চায়ওয়ালার! কীভাবে?

 রাতারাতি জীবন পাল্টে গেল এই পাকিস্তানি চায়ওয়ালার! কীভাবে?

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক: ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়েছিল পাকিস্তানের এই চা-ওয়ালার ছবি। কিন্তু কে তিনি? জেনে নিন নাম-ধাম এবং কীভাবে রাতারাতি ঘুরে গেল তাঁর জীবন।

ফোটোগ্রাফার জাভেরিয়া বা জিয়া আলির তোলা ইসলামাবাদের এক চায়ওয়ালার ছবি কিছুদিন আগে ভাইরাল হয় ইন্টারনেটে। এই ছবি দেখার পরে দু’দেশের মানুষই টুইটারে বহু মজার মন্তব্য করেন। শ্রুতি নামের এক ভারতীয় মহিলা লেখেন যে পাকিস্তানের চাওয়ালাদের এমন দেখতে? প্লিজ ওদেশে বোমা ফেলবেন না! তার উত্তরে আবার পাকিস্তানবাসী সোহেল চিমা লেখেন, ভারতীয় মেয়েদের উপর সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালানোর জন্য পাকিস্তানের চায়ওয়ালারই রয়েছেন।

কিন্তু কে এই চায়ওয়ালা? ফোটোগ্রাফার জাভেরিয়া এখন যদি ইসলামাবাদের সেই চায়ের দোকানে তাঁকে খুঁজতে যান, তবে নাও পেতে পারেন। কারণ জাভেরিয়ার ছবি ভাইরাল হওয়ার পরে সেই চায়ওয়ালার জীবন রাতারাতি পাল্টে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই শ্যুট করে ফেলেছেন তাঁর প্রথম মডেলিং অ্যাসাইনমেন্ট। অবাক লাগলেও সত্যি। পাকিস্তানের রিটেল সাইট ফিটিন.পিকে তাঁদের বিজ্ঞাপনের মডেল হিসেবে বেছে নিয়েছে ‘আরশাদ খান’কে। হ্যাঁ, এটিই চায়ওয়ালার নাম।

পাকিস্তানি সংবাদপত্র ‘ডন’-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন জানাচ্ছে, আরশাদ জানতেনও না যে কোনও এক ফোটোগ্রাফার তাঁর ছবি তুলেছেন। ইন্টারনেটে তাঁকে নিয়ে যে তুলকালাম হচ্ছে সেসব খবর তাঁর কানে পৌঁছয়নি। কারণ ১৮ বছরের আরশাদ কখনও স্কুলে যাননি। চায়ের দোকানে কাজ করতে করতেই হঠাৎই তিনি দেখেন কয়েকটি ছোট বাচ্চার হাতে রয়েছে লিফলেট জাতীয় কিছু এবং সেখানে রয়েছে তাঁর ছবি। দৌড়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারেন যে, একটি হেলিকপ্টার থেকে এই কাগজগুলি ফেলা হয়েছে।

তখনও তিনি জানেন না যে তাঁকে হন্যে হয়ে খুঁজছে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমগুলি। শেষ পর্যন্ত আরশাদের স্টল যখন খুঁজে পাওয়া যায়, তখন এত লোকজন, ক্যামেরা ইত্যাদি দেখে প্রথমটায় ভয় পেয়ে যান আরশাদ এবং তাঁর মামা। চটজলদি গা ঢাকা দিয়েছিলেন আরশাদ এবং হুড়োহুড়ির মধ্যে নিজের ফোনটাও হারিয়ে বসেছিলেন। সেই দিনটা খুবই খারাপ কেটেছিল আরশাদের। কিন্তু কথায় বলে, কোনও ভাল কিছুর আগে খুব খারাপ একটা সময় আসে। আরশাদের ক্ষেত্রেও অনেকটা তাই হয়।

পরের দিন থেকেই একেবারেই পাল্টে যায় তাঁর জীবন। কারণ, তিনি পেয়ে যান পাকিস্তানের রিটেল সাইট ফিটিন-এর মডেলিং অ্যাসাইনমেন্ট। ক্যামেরার সামনে অত্যন্ত সপ্রতিভ হয়েই পোজ দিয়েছেন আরশাদ। বিশেষ করে স্যুট-বুট পরে তাঁকে দেখাচ্ছে দারুণ। এইভাবে জীবন ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরে যাওয়ায় এখন খুবই খুশি আরশাদ এবং তাঁর মামা। গত তিন মাস হল আরশাদ এই চায়ের দোকানে বসছেন। পাকিস্তানের কোহাত-এ তাঁর আদি বাড়ি। ইসলামাবাদে এসে প্রকৃতপক্ষেই ভাগ্য খুলে গেল তাঁর। মডেলিং ছাড়াও এখন তিনি সিনেমাতেও অভিনয় করতে চান। আর খুব তাড়াতাড়ি বিয়েরও পরিকল্পনা রয়েছে আরশাদের।

অন্তর্জাল যে সত্যিই একটি সর্বশক্তিমান ‘জাল’ এবং সেখানে আটকা পড়ে মানুষের জীবন আমূল পাল্টে যেতে পারে, তার একটি জ্বলন্ত উদাহরণ আরশাদ।-এবেলা
২০ অক্টোবর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এইচএস/কেএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে