এক্সক্লুসিভ ডেস্ক: বন্ধু-বান্ধবদের অনেকের মুখগহ্বরে গন্ধ হয় (Foetor ex ore), নিশ্বাসে গন্ধ (Halitosis) হয়। এ সমস্যা রোগী যেমন বুঝতে পারেন, আশপাশে যারা থাকেন তারাও সমানভাবে বুঝতে পারেন। আবার আরেক ধরনের রোগী আছেন, যাদের মুখের গন্ধে অন্যরা আশপাশে টিকতে পারেন না, অথচ নিজের অভিযোজিতার (acclimatization) কারণে রোগী কোনো গন্ধ পান না। অন্যদিকে এমন রোগীও আছেন, যারা নিজের মুখের গন্ধ নিয়ে খুবই বিব্রত অথচ আশপাশে থাকা অন্যরা কিছুই টের পান না (Parosmia)। এরা সাধারণত মানসিক কারণে স্বাভাবিক অবস্থানকেই দুর্গন্ধ ছড়ানোর গল্প বলেন।
মুখের যে কোনো অংশে দাঁত বা মাড়িতে, বিশেষ করে জিহ্বার পেছনের অংশে জীবাণুর সংক্রমণ হলে সংশ্লিষ্ট জীবাণুর বিপাক (metabolism)-এর ফলে Volatile Sulfer Compound Hydrogen sulfide, Dimethyl sulfide, Methyl mercaptans তৈরি হয় আর তাই মুখে দুর্গন্ধ হয়। সাধারণত মুখ পরিষ্কারে অলসতা, নিয়মিত দাঁত পরিষ্কার না করা- বিশেষ করে খাওয়ার পর, ভালোভাবে ফিট না হওয়া আলগা দাঁতের ফাঁকে আটকানো ময়লা পরিষ্কার না করা, রক্তশূন্যতা, ক্যান্সার, লিভার কিংবা বৃক্কের অসুখে রোগীর রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা কমে গেলে মুখে এ ধরনের সংক্রমণ হয়। মুখ ছাড়াও অন্যান্য অসুখ যেমন- Rhinitis, Vincent's angina, Sjogren's syndrome, salivery gland tumour, Xerostomia, Mary joana গাঁজা, মদ সেবনকারী, Atophine like drug takersmn যাবতীয় নানা অসুখেও মুখে দুর্গন্ধ হয়। Purulent brpnchitis, Bronchiectasia, Lung abcess/cancer হলে নিশ্বাসে দুর্গন্ধ হয় (Halitosis)। খাদ্যনালিতে ক্যান্সার বা নষড়পশ হয়ে খাদ্য জমেও অনেক সময় মুখে অনেক দুর্গন্ধ হয়।
যারা কাঁচা পেঁয়াজ-রসুন খান তাদেরও মুখে গন্ধ হতে পারে। জটিল রোগ যেমন- Diabetic kitoacidosis, লিভার কিংবা বৃক্কের ক্রিয়া বন্ধ হওয়া বেহুশ রোগীদের মুখেও ভিন্ন ভিন্ন গন্ধ হয়। গন্ধ নির্ণয়ের জন্য বিভিন্ন পরীক্ষা যেমন Halitometer, Gas chromatometer, BANA test, B-Galactosidase test থাকলেও রোগীর নিজের উপলব্ধি, আশপাশে থাকা আত্মীয়স্বজনের বর্ণনাই মুখের গন্ধ নির্ণয়ের জন্য যথেষ্ট। অবশ্য গন্ধের কারণে বের করার জন্য নাক কান গলা বা আরও কোনো অসুখের জন্য বিভিন্ন পরীক্ষা করা যেতে পারে।
চিকিৎসা
সবচেয়ে উল্লেখ্যযোগ্য চিকিৎসা হচ্ছে নিয়মিত ব্রাশ করা। মুখের ঘা, মাড়ির রোগ, দাঁতের ক্ষয়রোগ এসব সারানোর সঙ্গে সঙ্গে নিয়মিত দাঁত, মাড়ি, জিহ্বা পরিষ্কার করতে হবে। ভালোভাবে অন্তত দুই বেলা দাঁত ব্রাশ করতে হবে। মাউথওয়াশ করে গলায় গড়গড় করতে হবে, পরিমিত পানি খেতে হব, মুখে পর্যাপ্ত লালা তৈরি করার জন্য কেউ কেউ চুইংগাম চিবাতে পারেন। আজকাল probiotics খেয়েও অনেকে লাভবান হচ্ছেন। মোট কথা মুখের স্বাস্থ্য ভালো রাখুন।
২১ অক্টোবর,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এআর