শনিবার, ২২ অক্টোবর, ২০১৬, ০৭:৩৩:০৫

সারা বিশ্বের ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণ করছেন মাত্র ১৪ জন!

সারা বিশ্বের ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণ করছেন মাত্র ১৪ জন!

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : সারা বিশ্বের ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণ করছেন মাত্র ১৪ জন, এ বিষয়টি মেনে নেওয়া অনেকের পক্ষেই অসম্ভব। কিন্তু বিষয়টি বাস্তবেই তাই। আর এ বিষয়টি নিয়ন্ত্রণের জন্য রয়েছে সাতটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ চাবি। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে বিজনেস ইনসাইডার।

ইন্টারনেটের বিষয়গুলোর গোপনীয়তা রক্ষা করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কারণ হ্যাকারদের হাত থেকে এ বিষয়গুলো রক্ষা করতে হয়। এ ছাড়া রয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জাতীয় নিরাপত্তা ও ব্যাংকের প্রচুর অর্থের নিরাপত্তার বিষয়টি। এ কারণে বিষয়টির নিয়ন্ত্রণ রয়েছে মাত্র ১৪ জনের হাতে।

গত শুক্রবারই ইন্টারনেটের নিরাপত্তার এ গুরুত্বের বিষয়টি নতুন করে স্মরণ করতে হয়। কারণ সে সময় ইন্টারনেটের একটি গুরুত্বপূর্ণ সার্ভার 'ডিন' হ্যাকারদের আক্রমণের কবলে পড়ে।

ডিন সার্ভারটি মূলত ইন্টারনেটের ডোমেইন নেম সিস্টেম (ডিএনএস) পরিচালিত করে। এটি ওয়েব ঠিকানাগুলোকে আইপি অ্যাড্রেসে রূপান্তরিত কর। এতে কম্পিউটারের পক্ষে ওয়েবপেজগুলো শনাক্ত করা সম্ভব হয়। ডিন হলো ডিএনএস প্রোভাইডার একটি সার্ভার মাত্র। এতে আক্রমণ করেই ইন্টারনেটের গতি ক্ষুণ্ণ করা সম্ভব হয়। তবে ইন্টারনেটের অংশ শুধু এ সার্ভার নয়, আরও বহু সার্ভার রয়েছে। তবে সবচেয়ে আশঙ্কার বিষয় হলো, ইন্টারনেটের এ ব্যবস্থাটি খুবই সংবেদনশীল। ফলে একটি বড় সার্ভারে আক্রমণ করা সম্ভব হলে তা পুরো ব্যবস্থাটিকেই মারাত্মক চাপে ফেলতে পারে।

ডোমেইন নেম সিস্টেম (ডিএনএস) হলো ইন্টারনেটের মূল অংশ। এটি অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে কাজ করে। আর এর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন প্রকৌশলী।

২০১০ সালের পর থেকে প্রতি তিন মাস অন্তর ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণকারী সেই প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা একত্রিত হন অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে। আর সেখানেই ইন্টারনেটের রূপক চাবি ভেরিফাই ও আপডেট করা হয়।

যে সংস্থার পক্ষ থেকে এ কাজটি করা হয় তার নাম ইন্টারনেট করপোরেশন ফর অ্যাসাইন্ড নেমস অ্যান্ড নাম্বারস (আইসিএএনএন)। প্রতিষ্ঠানটি আপনার কম্পিউটারে বিভিন্ন ওয়েবসাইটের ঠিকানা লেখা হলে সঠিক সাইটটি সেখানে পাঠানোর জন্য অলক্ষ্যেই কাজ করে।

কেউ যখন ইন্টারনেট করপোরেশন ফর অ্যাসাইন্ড নেমস অ্যান্ড নাম্বারস (আইসিএএনএন) এর ডেটাবেইসে প্রবেশাধিকার পায় তখন সে সারা বিশ্বের ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণের আংশিক ক্ষমতা পেয়ে যায়। তিনি কোনো কাজে ভুল করলে বিশ্বের নানা দেশের গুরুত্বপূর্ণ ওয়েবসাইটগুলো যেমন উল্টোপাল্টা হয়ে যেতে পারে তেমন হাজার হাজার কোটি ডলারের ক্ষতিও হতে পারে।

ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণের বিষয়টির সংবেদনশীলতার কারণে একজন মানুষের হাতে যেন বেশি নিয়ন্ত্রণভার না যায় সে জন্য সতর্ক থাকে আইসিএএনএন কর্তৃপক্ষ। আর এ কারণে তারা মোট ১৪ জনকে এ কাজের দায়িত্ব দিয়েছে। তারা যদি ইন্টারনেটের কোনো পরিবর্তন করতে চায় তাহলে কমপক্ষে তিনজন একত্রে চাবি দিয়ে সে পরিবর্তন করতে পারে। তার আগ পর্যন্ত তাদের কাজ গ্রহণযোগ্য হয় না।

ইন্টারনেটের চাবি : ইন্টারনেটের যে ফিজিক্যাল চাবি রয়েছে তা মূলত স্মার্ট কি কার্ড। এগুলো এক একটি সেফে সংরক্ষিত থাকে। আর এটি নিয়ে কাজ করার জন্য একাধিক চাবির প্রয়োজন হয়। একেই ইন্টারনেটের মাস্টার চাবি বলা হয়।

বাস্তবে ইন্টারনেটের মাস্টার কি একটি কোড। আইসিএএনএন ডেটাবেইস প্রবেশের জন্যই এ কোডটি প্রয়োজন হয়। আর এ কোডটিই ইন্টারনেটের বিভিন্ন অংশ নিয়ন্ত্রণ করে।

গত জুন মাসে ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণকারী সেই প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা একত্রিত হন অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে। তবে তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও ছিল অত্যন্ত কড়া। আর সেখানেই ইন্টারনেটের রূপক চাবি ভেরিফাই ও আপডেট করা হয়। কালেরকণ্ঠ।

২২ অক্টোবর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে