এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : শত্রুদের দেশে ঢুকে গিয়ে দেশের জন্য তথ্য সংগ্রহ করে আনাটাই এদের কাজ। প্রাণের তোয়াক্কা না করে দিনের পর দিন পড়ে থাকতে হয় শত্রুদের ডেরায়। আর ধরা পড়ে গেলেই, আর রক্ষে নেই। এমনই এক ব্যক্তির নাম বিনোদ সাহানে। ১১ বছর পাকিস্তানের জেলে কাটিয়েছেন তিনি। দেশে ফেরেন ১৯৮৮ সালে। যদিও ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা RAW এজেন্টদের নাম প্রকাশ্যে আনা যায় না। কিন্তু বিনোদ সাহানে ব্যতিক্রম।
বর্তমানে জম্মুতে Ex-sleuths Association-এর প্রধান তিনি। যাঁরা পাকিস্তানে বন্দি হয়েছেন, তাঁদের পরিবার সরকারের কাছে উপযুক্ত সম্মান পায় না, এই দাবিতে সরব ওই সংগঠন। বিনোদ সাহানে জানিয়েছে, ‘হিন্দি ছবির থেকেই বেশি চ্যালেঞ্জিং আমাদের জীবন। সিনেমায় যা দেখানো হয় তা অর্ধেকেরও কম। আমি জানি, কারণ পাকিস্তানে ১১ বছর জেল খেটেছি আমি। আমি এও জানি, যারা আর পাকিস্তান থেকে ফিরে আসে না তাদের মৃতদেহ ছুঁড়ে ফেলা হয় নর্দমায়।’
একসময় ট্যাক্সি ড্রাইভার ছিলেন সাহানে। একসময় তাঁর ট্যাক্সিতে এক প্যাসেঞ্জার ওঠেন, যিনি ছিলেন এক গোয়েন্দা অফিসার। তিনিই বিনোদ সাহানেকে এই কাজের অফার দেন। তিনি আরও বলেন, ‘সরবজিতের কথা সবাই জানে। কিন্তু এমন শয়ে শয়ে সরবজিত পচছে পাকিস্তানের জেলে। কেউ তাদের কথা বলে না। সেনা যেভাবে অস্ত্র হাতে সীমান্তে যুদ্ধ করে, তার থেকে আমরা কিছু কম করি না। আমরাও দেশের জন্য কাজ করি, তাও আবার শত্রুদের ডেরা থেকে। সরকারের উচিৎ আমাদের পরিবারকে দেখা।’
১৯৭৭-এ পাকিস্তানে পাঠানো হয় সাহানেকে। সেই বছরই গ্রেফতার হন তিনি। বিচারে ১১ বছরের জেল হয় তাঁর। ১৯৮৮-র মার্চে ছাড়া পেয়ে দেশে ফেরেন। এরপর নিজের পাওনাটুকুর জন্য দরজায় দরজায় মাথা ঠুকেছেন তিনি। কোনও লাভ হয়নি। তাই এখন দলবদ্ধ হয়ে দাবি জানাচ্ছেন, যদি কোনও লাভ হয়। তাঁর কথায়, ‘আমি একা নই। আমাদের অসম্মান করুক তাতে আপত্তি নেই, কিন্তু আমরা যখন জেলে ছিলাম তখন আমাদের পরিবারের দায়িত্বও নেওয়া হয়নি। আমার মত অনেকেই জীবনের কয়েকটা মূল্যবান বছর পরিবার ছেড়ে পাকিস্তানের জেলে কাটিয়েছে।’ শুধু তাদের হিরোইজম নিয়ে সিনেমা বানানো হয়, পয়সার জন্য। এই কথা বলে ক্ষোভ উগরে দেন সাহানে।
সম্প্রতি ‘ফোর্স ২’ ছবির জন্য জন আব্রাহামের সঙ্গে দেখা করেছেন তিনি। শেয়ার করে নিয়েছেন তাঁর অভিজ্ঞতা। তাঁর অভিযোগ, বেশির ভাগ ছবিতেই শুধু ‘হিরোইজম’টাই দেখানো হয়। তাদের কষ্টগুলো তুলে ধরা হয় না। -কলকাতা২৪।
১৪ নভেম্বর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম