রবিবার, ২৭ নভেম্বর, ২০১৬, ১১:২৯:৪১

এই এক চুক্তির কারণে আরব জগতে নামে মহা বিপর্যয়

এই এক চুক্তির কারণে আরব জগতে নামে মহা  বিপর্যয়

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক: ১৬ই মে, ১৯১৬৷ একশ বছর আগে এমন এক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, যা গোটা আরব জগতের মানচিত্র বদলে দেয়৷ সেই সিদ্ধান্তের সুদূরপ্রসারী প্রভাব আজও টের পাচ্ছে গোটা অঞ্চল৷ আজকের অস্থিরতার জন্য অনেকেই এই চুক্তিকে দায়ী করেন৷
সাইকস-পিকো চুক্তি

মার্ক সাইকস ও ফ্রঁসোয়া জর্জ-পিকো – যথাক্রমে ব্রিটেন ও ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী৷ ওসমানি সাম্রাজ্যের পতনের পর ইউরোপের এই দুই ঔপনিবেশিক শক্তি গোপনে তাদের নিয়ন্ত্রিত আরব এলাকা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয়৷ দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নামেই এই চুক্তি আজও পরিচিত৷

জমির ভাগ-বণ্টন

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শেষে ওসমানি সাম্রাজ্যের মধ্যে আজকের মধ্যপ্রাচ্যের একটা বিশাল এলাকাও ছিল৷ নিজেদের মধ্যে সংঘাত এড়াতে ফ্রান্স ও ব্রিটেন প্রথমে সেই এলাকা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয়৷ একটি অঞ্চলের উপর যৌথ নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত নেয় তারা৷ তবে সীমা নিয়ে মতবিরোধ পুরোপুরি দূর হয়নি৷

জর্ডানের আত্মপ্রকাশ

১৯২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ব্রিটেন নিয়ন্ত্রিত প্যালেস্টাইনের একটি অংশে আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রান্সজর্ডান রাষ্ট্র গঠন করা হয়৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৪৬ সালে ব্রিটেনের অনুরোধ জাতিসংঘ সেই এলাকাকে স্বাধীন ঘোষণা করে৷ বাদশাহ আব্দুল্লাহ প্রথম শাসক হিসেবে ট্রান্সজর্ডানের রাশ ধরেন৷

ইসরায়েল রাষ্ট্রের সূচনা

১৯১৭ সালের নভেম্বর মাসে ‘বালফুর ঘোষণা’-র আওতায় লন্ডনের ইহুদি সমাজকে প্যালেস্টাইনে এক ‘ন্যাশানাল হোমল্যান্ড’ প্রদান করা হয়৷ ব্রিটেন নিয়ন্ত্রিত সেই অঞ্চলে ইহুদি বসতিকারীরা আজকের ইসরায়েলের বীজ বপন করেন৷ সেই সিদ্ধান্তও মধ্যপ্রাচ্যে ক্ষমতার সমীকরণ বদলে দিয়েছিল৷

আরব ঐক্যের দাবি করে আইএস

বছর দুয়েক আগে তথাকথিত ইসলামিক স্টেট ইরাক ও সিরিয়ার মধ্যে সীমান্তে চেকপয়েন্ট ধ্বংস করে প্রতীকী অর্থে সাইকস-পিকো চুক্তি বাতিল করার ঘোষণা করেছিল৷ তবে সেই চুক্তিতে এই সীমানার কোনো অস্তিত্ব ছিল না৷ সামগ্রিকভাবে একাধিক রাজনৈতিক শক্তি আরব পুনরেকত্রীকরণের স্বপ্ন দেখিয়ে চলেছে৷

বিচ্ছিন্ন কুর্দি জাতি

সরাসরি না হলেও সাইকস-পিকো চুক্তির কারণে কুর্দি জনগোষ্ঠী নিজস্ব কোনো এলাকা রাষ্ট্র হিসেবে পায়নি৷ ইরাকের উত্তরে আজ কুর্দিরা এক স্বশাসিত অঞ্চল অর্জন করলেও অন্যান্য দেশে তাদের অত্যাচার-নিপীড়নের শিকার হতে হচ্ছে৷

আরব বিশ্বের ভবিষ্যৎ

ইরাক ও সিরিয়ার মতো দেশে সাম্প্রদায়িক সংঘাতের মতো ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আরব বিশ্বের মানচিত্র আবার নতুন করে সাজানোর ইঙ্গিত শোনা যায় বিভিন্ন মহলে৷ ইরাকে শিয়া, সুন্নি ও কুর্দিদের এলাকা মোটামুটি স্পষ্ট হলেও সিরিয়ায় সেই সমীকরণ অত্যন্ত জটিল৷ স্থিতিশীলতার স্বার্থে রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রক ও সাধারণ মানুষও সহজে আরও বিভাজন মেনে নেবে কিনা, সে বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে৷ আরও জানতে উপরে ডানদিকে ক্লিক করুন৷-ডিডব্লিউ
২৭ নভেম্বর,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এআর

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে