বুধবার, ৩০ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:৩৬:২৭

হেমন্ত থেকে শীতে জার্মানরা যে দশটি কাজ বা ‘অকাজ’ করেন

হেমন্ত থেকে শীতে জার্মানরা যে দশটি কাজ বা ‘অকাজ’ করেন

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক: জার্মানিতে হেমন্ত মানেই ঝরাপাতা; পথেঘাটে, বনেজঙ্গলে হেমন্তের পাতাবাহার৷ আবহাওয়া খারাপ থাকলে ঘরে বসে বই পড়াও চলে৷ তবে জার্মানরা এই মরশুমে আরো অনেক কাজ বা ‘অকাজ’ করে থাকেন৷

ছোটদের হাতে কাগজের লণ্ঠন

প্রতিবছর নভেম্বরের গোড়ার দিকে আসে সেন্ট মার্টিনস ডে, সেই খ্রিষ্টান সন্ত যিনি এক ঝড়ের দিনে এক ভিখিরিকে তাঁর ক্লোক দান করেছিলেন৷ ছোটরা এদিন তাদের নিজেদের তৈরি কাগজের লন্ঠন হাতে নিয়ে মিছিল করে যায় সন্ত মার্টিনের গান গাইতে গাইতে৷ বড়দের কেউ একজন সন্ত মার্টিন সেজে সাদা ঘোড়ায় চড়ে শোভাযাত্রার সাথে যান৷


কার্নিভাল

কার্নিভালের সূচনা হলো বছরের এগারো নম্বর মাস অর্থাৎ নভেম্বরের এগারো তারিখে সকাল এগারোটা বেজে এগারোটা মিনিটে৷ জার্মানিতে কার্নিভালের তিনটি মূল ঘাঁটি কোলোন, ড্যুসেলডর্ফ আর মাইঞ্জে এই দিনটি বিশেষ ধুমধামসহ পালন করা হয়৷ কার্নিভালের মরশুম শেষ হয় পরের বছর অ্যাশ ওয়েডনেস ডে-তে, ২০১৭ সালে যা পড়বে পয়লা মার্চে৷

বাদামের মরশুম

বিশেষ করে চেস্টনাট৷ বাদামগুলো ঢাকা থাকে কাঁটাওয়ালা সবুজ খোলার মধ্যে৷ এই চেস্টনাট খাওয়ার চেস্টনাট নয়, কিন্তু ছোটরা এগুলো কুড়োতে ভালোবাসে, তাই দিয়ে নানা ধরনের ছোট ছোট জন্তুজানোয়ার বানাতে ভালোবাসে৷

মাশরুম খোঁজা

হেমন্তের জঙ্গলে ব্যাঙের ছাতা খুঁজতে বেরোন অনেকে, খাওয়া যায়, এমন সব ব্যাঙের ছাতা; ভেজে বা রান্না করে কিংবা ওমলেটে দিয়ে৷ মুশকিল হলো, বিষাক্ত ব্যাঙের ছাতারও কোনো অভাব নেই, তার ওপর তাদের অনেককে অন্য কোনো নির্দোষ ও সুস্বাদু ব্যাঙের ছাতার মতো দেখতে৷ কাজেই মাশরুম খোঁজার কাজটা আনাড়িদের জন্য নয়, নয়তো হাসপাতালে যেতে হতে পারে৷

ঝরা পাতা

হেমন্ত মানেই পাতা ঝরার দিন৷ তবে ঝরার আগে গাছের পাতা যেন বহুরুপীর মতো রঙ বদলায়, সবুজ থেকে বেগুনি, লাল হয়ে হলুদ ও শেষমেশ বাদামি৷

স্পা বা উষ্ণ প্রস্রবণ

ইংরেজিতে বলে থার্মাল বাথ, অর্থাৎ সারা বছর গোসল করা যায়, এমন গরম পানির সুইমিং পুল৷ এগুলো শীতেও খোলা থাকে এবং জার্মানদের অতি প্রিয়৷ মুশকিল এই যে, স্পা’র কোনো কোনো বিভাগে, যেমন সনায়, জামাকাপড় পরার নিয়ম নেই, কাজেই সাথে একটা তোয়ালে রাখা ভালো৷

গরম কাপড় বার করা

পশমের মোজা থেকে শুরু করে আন্ডায়ওয়্যার হয়ে মাথা ঢাকার টুপি অবধি, পশম ছাড়া জার্মানিতে শীত কাটানোর কথা ভাবাই যায় না৷ প্রশ্ন হলো, গরমে এই শীতের পোষাকগুলো কোথায় থাকবে এবং কিভাবে রাখা হবে, নয়তো সেগুলো পোকায় কেটে দিতে পারে৷

হিটিং

বাড়িতে হিটিং ছাড়া এই ঠাণ্ডার দেশে বাঁচা যায় না৷ গোড়ায় ছিল কয়লা কিংবা তেলের ওভেন বা চুল্লি; পরে আসে গ্যাস বা বিদ্যুতের সেন্ট্রাল হিটিং; আরও আধুনিক হলো আন্ডারফ্লোর হিটিং বা মেঝের তলার হিটিং৷

গরম হাওয়া বার করে দিতে জানলা খোলা

এই কাজটা এতোই জার্মান যে এর কোনো ইংরেজি প্রতিশব্দ নেই৷ জার্মানে বলে ‘‘স্টোস-ল্যুফ্টেন’’ যার অর্থ, ‘এক ধাক্কায় হাওয়া লাগানো’৷ হিটিং চলা অবস্থাতেই কয়েক মিনিটের জন্য বাইরের জানলা দরজা হাট করে খুলে দেওয়ার নাম ‘স্টোস-ল্যুফ্টেন’৷ এতে নাকি ঘরে ড্যাম্প লেগে শ্যাওলা ধরে না৷

অ্যাডভেন্ট ক্যালেন্ডার

বড়দিনের আগের শেষ ২৪ দিনের হিসেব রাখার জন্য যে বিশেষ ক্যালেন্ডারটি ব্যবহার করা হয়, তার নাম অ্যাডভেন্ট ক্যালেন্ডার বা খ্রিষ্টাগমনের বর্ষপঞ্জি৷ এই ক্যালেন্ডারের বিশেষত্ব হল, এর খোপে খোপে চকোলেট রাখা থাকে, প্রতিটি দিনের জন্য একটি করে চকোলেট৷-ডিডব্লিউ
২৬ নভেম্বর,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এআর

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে