শুক্রবার, ০২ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১০:৪৭:০৮

আলেপ্পো যেন গোরস্তান

আলেপ্পো যেন গোরস্তান

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক: দিন দিন বিশাল এক গোরস্তানে পরিণত হচ্ছে সিরিয়ার পূর্ব আলেপ্পো। সরকারি সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে অব্যাহত যুদ্ধের কারণেই এমনটি হচ্ছে বলে সতর্ক করেছেন জাতিসংঘের ত্রাণ বিভাগের প্রধান স্টিফেন ও'ব্রায়ান।

গত বুধবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি অধিবেশনে এ কথা বলেন তিনি। গত কয়েক দিনের লড়াইয়ের কারণে এলাকাটির ৫০ হাজারের বেশি মানুষ ঘরবাড়ি হারা হয়েছেন বলেও জানান তিনি।

এদিকে সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, আলেপ্পোর পূর্বাঞ্চলে বুধবার বোমা হামলায় ৭ শিশুসহ ২৬ জন নিহত হয়েছে। গত ১৫ দিনে নিহতের এ সংখ্যা ৩০০ ছাড়িয়েছে। খবর এএফপি ও আলজাজিরার।

প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ ও তার মিত্র রাশিয়ার বাহিনী আলেপ্পোতে নতুন করে বোমাবর্ষণের পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ বুধবার জরুরি সভা আহ্বান করে। বৈঠকে বক্তব্যের সময় বিশ্ব সংস্থাটির ত্রাণ বিভাগের প্রধান স্টিফেন ও'ব্রায়ান বলেন, সরকারি বাহিনীর বোমায় প্রাণ হারাচ্ছে অগণিত নারী-পুরুষ ও শিশু। বিদ্রোহী অধ্যুষিত জেলাগুলোতে সরকারি বাহিনীর হামলায় শনিবার থেকে এ পর্যন্ত ৫০ হাজারের বেশি মানুষ ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছে।

ও'ব্রায়ান জানান, যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকাগুলো থেকে যারা পালাতে চাইছে, তারাও বিপদের মুখে পড়ছে। বিদ্রোহীদের ছোট ছোট দল তাদের থামিয়ে দিচ্ছে। অনেকে দু'পক্ষের গোলাগুলিতে প্রাণ হারাচ্ছে। কেউ সরকারি বাহিনীর হাতে ধরা পড়ছে এবং সরকারি চেকপয়েন্টগুলোতে গিয়ে গুম হয়ে যাচ্ছে। মানবতার স্বার্থে হলেও যুদ্ধ বন্ধের জন্য তিনি বিবদমান গোষ্ঠীগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।

তবে লড়াই বন্ধের আহ্বান নাকচ করে দিয়েছেন জাতিসংঘে রাশিয়ার দূত ভিটালি চুরকিন। তিনি বলেন, সিরিয়ায় তাদের সন্ত্রাসবাদবিরোধী লড়াই বন্ধ করা হবে না।

সিরিয়ায় বিদ্রোহীদের দখলকৃত এলাকাগুলো পুনর্দখলের লড়াইয়ে আসাদ সরকারকে রুশ বাহিনী ছাড়াও সহায়তা করছে লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ এবং ইরানের নেতৃত্বাধীন একটি ইউনিট।

সিরিয়ায় জাতিসংঘ দূত স্টিফান ডি মিস্তুরা জানান, বিদ্রোহী অধ্যুষিত এলাকার প্রায় ৪০ শতাংশ সরকারি বাহিনী পুনর্দখল করেছে। ২০১২ সাল থেকে আলেপ্পোর পূর্বাঞ্চল বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে ছিল।

সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সানা জানিয়েছে, সরকারি বাহিনী আলেপ্পোর বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত আল-হায়দারিয়া, আল-শাখোর, আল-ইনজারাত, আল শেখ খেদর, জাবাল বাদ্রো এবং আল-হালকের বিস্তৃত এলাকা দখল করে নিয়েছে।

আলেপ্পোতে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা হোয়াইট হেলমেটস জানিয়েছে, গতকাল বিমান ও হেলিকপ্টার ব্যবহার করে দেড় শতাধিক হামলা চালানো হয়। সেই সঙ্গে বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ১২০০টি আর্টিলারি শেল হামলাও চালিয়েছে সরকারি বাহিনী। আল মিয়াসার, বাব আল-নাইরাব এবং আল-সালহিন এলাকায় সবচেয়ে বেশি হামলা চালানো হয়। গত ৭২ ঘণ্টায় আলেপ্পোর এসব এলাকা ছেড়েছে প্রায় ২৫ হাজার বেসামরিক নাগরিক। গুলি ও বোমার মুখে তারা ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছে।
২ ডিসেম্বর,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এআর

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে