শনিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৬, ০৩:৫৯:৩৮

অবসরের পর যা করবেন মাশরাফি, নিজেই জানালেন

অবসরের পর যা করবেন মাশরাফি, নিজেই জানালেন

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক: মাশরাফি অবসর নিয়ে কি করবেন? এই প্রশ্নটি ছিলো বেশ আগের। এবার মিলেছে এর উত্তর। আকাঁজোকার প্রতি তার প্রচণ্ড দুর্বলতা। ছোটবেলায় চিত্রশিল্পীও হওয়ার ইচ্ছা ছিল। সেই ইচ্ছা পূরণ  না হলেও আপসোস নেই।

ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন তা পূরণ হয়েছে। মাশরাফির আরেকটা  ইচ্ছা আছে। এবং সেটা হলো কার্টুনিস্ট হওয়া। ক্রিকেট থেকে অবসরের পর এ কাজে মন দিবেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের  ওয়ানডে অধিনিায়ক। নিজের ফেসবুকে সেই ইচ্ছার কথা লিখেছেন তিনি। এ লেখায় এঠ এসেছে তার শিশবের নানা কথাও। পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো মাশরাফির সেই লেখাটা-

‘ছোটবেলায় প্রচন্ড ডানপিটে ছিলাম। বন্ধুরা মিলে দলবেঁধে ঘুরে বেড়াতাম আর পাড়া মাথায় তুলে রাখতাম সবসময়। বেশির ভাগ সময়ই থাকতাম নানা বাড়িতে, নানীর কাছে।নদীতে ঝাপাঝাপি,নারিকেল পাতা দিয়ে জংলী সেঁজে ভয় দেখানো, এদিক ওদিক দুষ্টামি, ফুটবল আর ক্রিকেট!

আমার নানা বাড়ী থেকে হাঁটা দূরত্বে ছিল সুলতান দাদুর বাসা। সুলতান দাদু মানে বাংলাদেশের কিংবদন্তি চিত্রশিল্পী এস এম সুলতান। তখন তো আর এত কিছু বুঝতাম না, দুষ্টামি করেই কুল পেতাম না। আমি দাদু বলেই ডাকতাম ওনাকে।

তো,সুলতান দাদুর গল্প বলছি একটা কারনে। ছোট বেলায় সুলতান দাদুর কাছে গিয়ে বায়না ধরতাম ছবি আঁকা শিখাতে। দাদুও খুব আগ্রহ নিয়ে শেখানোর উদ্দেশ্যে কয়লা হাতে নিতেন। আমি আগ্রহ খুব বেশিক্ষণ রাখতে পারতাম না। মন পরে থাকতো মাঠে। মাঠের টানে সেখান থেকে পালাতাম। দাদু অভিমান করে বলতেন, "এমন করলে আঁকাআঁকি হবে?"

আঁকাআঁকিটা হয়তো হয়নি কিন্তু ক্রিকেটটা তো হয়েছে। আগ্রহ নিয়ে শিখলে আজ ক্রিকেটার মাশরাফি না হয়ে হয়ত আর্টিস্ট মাশরাফি হয়ে যেতাম। এটা বলার কারন হচ্ছে যার যেদিকে আগ্রহ, সেদিকে মনোযোগটা দিলে সেটা কিন্তু ঠিকই হবে, হতে বাধ্য!

অবশ্য আর্টিস্ট না হওয়া নিয়ে আমার আফসোস নাই। বরং, আমি খুশি যে আমি আমার আগ্রহের জায়গাকেই প্রাধান্য দিয়েছি। সেই সাথে পরিবারের সাপোর্টও পেয়েছি সবসময়। অবশ্য, সাপোর্ট পেতে প্রচন্ড স্ট্রাগলও করতে হয়েছে। খেলার কারণে যে কত মার খেয়েছি হিসাব নাই।

এত বড় মাপের শিল্পী হবার পরেও কিন্তু এস এম সুলতান জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত এঁকে গেছেন।গাছের শেকড় বাকল দিয়ে নিজে নিজে রং বানাতেন আর আঁকতেন।তার মানে শুধু আগ্রহ থাকলেই কিন্তু সবকিছু হয় না।

সেই সাথে প্র্যাকটিসটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমি দেখলাম ভালো খেলার মূলমন্ত্র যেমন প্র্যাকটিস, ভালো আঁকার মূলমন্ত্রও কিন্তু তাই। আসলে, যেকোন কিছুতে ভালো করতেই দরকার অনেক অনেক প্র্যাকটিস।আর সাথে থাকতে হবে সেই জেনুইন আগ্রহ।

আর এখন কিন্তু সময়টা আমাদের। এত এত সুযোগ, হাতের মুঠোয় সবকিছু।শুধু আগ্রহ থাকলেই মোবাইলে ইন্টারনেটে দেখে নিতে পারছো পছন্দের বোলারের বোলিং কৌশল কিংবা ব্যাটসম্যানের ব্যাটিং পরামর্শ। কোন কিছুই আর সিক্রেট নাই। ঠিক একই ভাবে আমার ছোটভাইয়ের এক কার্টুনিস্ট বন্ধুর মাধ্যমে আমি একটা কমিউনিটির খবর জানি যারা ইউটিউবের মাধ্যমে আঁকা আঁকির কৌশল শিখাচ্ছে এবং সেটাও আবার বাংলাতে।

ইউটিউবে ওদের চ্যানেলের নাম 'Cartoon People' আর শো'টার নাম 'Cartoon Show Dhaka'। তোমরা যারা আর্টিস্ট অথবা কার্টুনিস্ট হওয়ার স্বপ্ন দেখ কিংবা আরেকবার ঝালিয়ে নিতে চাও ছবি আঁকার হাতটাকে তারাও ঘুরে আসতে পারো ওদের ইউটিউব চ্যানেলটা আর জয়েন করতে পারো ওদের সাথে।

চ্যানেলটা সাবস্ক্রাইব করে রাখছি। ভাবছি, ক্রিকেট থেকে অবসরের পর তাদের এই শো দেখে সব শিখে আমিও কার্টুনিস্ট হয়ে যাবো।’
১৭ ডিসেম্বর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/হাবিব/এইচআর

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে