শনিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১০:৪৭:০৪

ইরাকি শরণার্থীর সাথে মেসিডোনীয় পুলিশ কর্মকর্তার প্রেম, অতঃপর...

ইরাকি শরণার্থীর সাথে মেসিডোনীয় পুলিশ কর্মকর্তার প্রেম, অতঃপর...

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : যুদ্ধকালীন সময়ে ইরাক থেকে স্রোতের মতো আসা অভিবাসীদের সঙ্গে মেসিডোনিয়া এসেছিলেন নুরা আরকাভাজি। সেখানে বাধার মুখে মানবেতর জীবন যাপন পালনের সময় দেখা হয় দেশটির পুলিশ কর্মকর্তা ববি ডোডেভস্কির সঙ্গে।
 
বৃষ্টিস্নাত এক দিনে, কর্দমাক্ত সীমান্ত এলাকায় দুজনের প্রথম দেখা শেষ পর্যন্ত গড়ায় পরিণয়ে।এখন তারা জীবনসঙ্গী।
 
মেসিডোনিয়ার এক ছোট্ট অ্যাপার্টমেন্টে এখন নুরা ও ডোডেভস্কির সুখের সংসার। সেখানেই চায়ের কাপ হাতে পুলিশ কর্মকর্তা ডোডেভস্কি এএফপিকে জানান নিজেদের প্রথম দেখা ও সংসার শুরুর গল্প।
 
নুরা একজন কুর্দিশ মুসলিম। অন্যদিকে ববি একজন অর্থোডক্স খ্রিস্টান। প্রথম দেখার পরই ববি নুরার প্রেমে পড়ে যান। এটা এ বছরের মার্চের দিকের ঘটনা। এর ঠিক চার মাস পর নুরা ও ববি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
 
স্মৃতির পাতা উল্টিয়ে ববি বলেন, বৃষ্টিস্নাত একদিন নুরার সঙ্গে আমার প্রথম দেখা। সীমান্তের নো ম্যানস ল্যান্ডে নুরা অবস্থান করছিল। আর আমি মনে হয় তখন ডিউটির শিফট পরিবর্তন করে স্টেশন ত্যাগের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। হঠাৎ তার সঙ্গে আমার দেখা। সেই দেখাতেই শেষ পর্যন্ত দুজনের একসঙ্গে পথ চলার শুরু।
 
দুজনের সাক্ষাৎ ও পরিণয়ের বিষয়টিকে অদৃষ্টের লিখন বলেই মানেন ডোডেভস্কি।
 
২০ বছর বয়সী নুরার সম্পর্কে ডোডেভস্কি জানান, তার বাবা ছিলেন একজন প্রকৌশলী। আইএস তাদের এলাকায় হামলা চালানোর পর তার বাবাকে ধরে নিয়ে যায়। তার মুক্তির জন্য মোটা অংকের টাকা দাবি করে জঙ্গি সংগঠনটি।
 
পরে নুরা, তার ভাইবোন ও অভিভাবক ইরাক ছেড়ে পশ্চিমের দিকে যাত্রা শুরু করেন। পরিবারের সদস্যরা কেবল প্রাণের মায়ায় দুর্বিসহ দীর্ঘ সেই যাত্রা মেনে নেন। পরিবারটি তুরস্ক থেকে গ্রিস হয়ে শেষ পর্যন্ত মেসিডোনিয়াতে এসে উঠে।
 
নিষ্পেষিত সেই দীর্ঘ পথে নুরার পরিবারের মতো আরও অনেক পরিবার মেসিডোনিয়াতে আসে।
 
নুরা বলেন, অনেক কষ্ট করে আমরা পালিয়ে আসি। নিজ দেশে আমাদের ওপর খুবই নির্যাতন হচ্ছিল। জীবন বাঁচাতে আমরা জার্মানিতে যাওয়ার চেষ্টা করি। স্বপ্ন ছিল কেবল পুরো পরিবার নিয়ে নিরাপদে বেঁচে থাকার। সেই স্বপ্ন আজ অনেকবেশি বাস্তব। তবে জার্মানিতে নয়, মেসিডোনিয়ায়।
 
সামনের দিনগুলোতে যাতে একসঙ্গে চলতে পারেন সে জন্য সবার ভালোবাসা ও সহযোগিতা চেয়েছেন এই দম্পতি। আর তাদের ভালোবাসা ও পরিণয়ে রচিত হয়েছে ২০১৬ সালের ভালোবাসার গল্প।
৩১ ডিসেম্বর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে