এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : রাস্তার ধারে, কিংবা মাঠের মাঝে দাঁড়িয়ে থাকা গাছ শুধু দুষণ নিয়ন্ত্রণই করে না, ইতিহাসও ধরে রাখে। পোড়ো বাড়ির দেওয়াল ফুঁড়ে গজিয়ে ওঠা কিংবা রাস্তার ধারে গজিয়ে ওঠা বট-অশ্বত্থও বহু ইতিহাসের সাক্ষী। কিন্তু সেই গাছই যদি ৩৯১ বছরের পুরনো হয়, তাহলে তিন শতকের ইতিহাসেরও সাক্ষী সে।
গত তিন শতক ধরে বিশ্বজুড়ে ঘটে গিয়েছে বহু ঘটনা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ থেকে শুরু করে লাতিন আমেরিকার দেশগুলির স্বাধীনতাপ্রাপ্তি, বিশ্বজুড়ে ঘটে যাওয়া একের পর এক যুগান্তকারী ঘটনা, সবকিছুর সাক্ষী থেকেছে এই গাছ—বনসাই।
বনসাই অর্থাৎ বামন গাছ। তবে দেখতে ছোট হলেও এই গাছটির জীবনকাল অনেক লম্বা। প্রায় ৪০০ বছরের বেশি বাঁচে এই গাছ। বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে বনসাই গাছের দেখা মেলে প্রচুর। তবে এই গাছটিকে প্রাগৌতিহাসিক বললেও কিছু ভুল বলা হবে না।
১৬২৫ সালে গাছটির জন্ম। সেই হিসেবে গাছটির বর্তমান বয়স ৩৯১ বছর। ১৯৪৫ সালে ৬ অগস্ট হিরোশিমার উপর পরমাণু বোমা ফেলে আমেরিকা। প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয় ওই ঘটনায়। হিরোশিমার যে এলাকায় বিস্ফোরণ ঘটেছিল, সেখান থেকে মাত্র ২ মাইল দূরে থাকত ইয়ামাকি পরিবার। গাছটি ছিল ওই পরিবারেরই। ওই বিস্ফোরণ থেকে কোনওমতে রক্ষা পায় ইয়ামাকি পরিবার। বেঁচে গিয়েছিল সেই গাছটিও। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সে দিনের ওই নৃশংস ঘটনার সাক্ষী ছিল ওই গাছটি।
বর্তমানে বনসাই গাছটির নতুন ঠিকানা ওয়াশিংটনের ইউনাইটেড স্টেট ন্যাশনাল অরবোরেটুম। মজার \\বিষয় এটাই যে, ১৯৭৬ সালে মাসারু ইয়ামাকি এই গাছটি আমেরিকাকে দিয়ে দেন, যে-আমেরিকা হিরোশিমাকে ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছিল। আরও মজার বিষয় যে, ২০০১ সাল পর্যন্ত অরবোরেটুমের কর্তৃপক্ষ নিজেও জানতেন না যে গাছটির সঙ্গে এই ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে। ইয়ামাকির নাতি-নাতনিরা গিয়ে গাছটির ইতিহাস বর্নণা করেন। পরে ইয়ামাকির পরিবারের তরফে জানানো হয়, দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও মজবুত করতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ইয়ামাকির পরিবার।
০৩ জানুয়ারী, ২০১৭/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম